গৌতম গম্ভীর ফিরতেই যেন অন্য রূপে পাওয়া গিয়েছে সুনীল নারিনকে। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই মুগ্ধ করছেন। অবশেষে স্বপ্নপূরণও হল সুনীল নারিনের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিলিয়ে কেরিয়ারে ৫০০-র বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন সুনীল নারিন। বিভিন্ন দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও খেলেন। কিন্তু সেঞ্চুরির কলামে শূন্য ছিল তাঁর। এ মরসুমে একটি ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেটিই ছিল টি-টোয়েন্টিতে তাঁর সর্বাধিক স্কোর। অবশেষে ইডেনে সেঞ্চুরির অভিযান ‘মঙ্গল’ হল সুনীল নারিনের।
ক্যারিবিয়ান ক্যালিপসো সকলেরই জানা। ইডেনে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের দাপটে কলকাতায় ক্য়ালিপসো। কলকাতার প্রচণ্ড গরম। তার মধ্যেই স্বপ্নপূরণ সুনীলের। কেরিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি এল তাঁর ব্য়াটে। টস জিতে কেকেআরকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন টেবল টপার রাজস্থান রয়্যালস অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। ওপেনিং পার্টনার ফিল সল্টকে চতুর্থ ওভারেই হারান সুনীল নারিন। তাঁর দাপট থামেনি।
সুনীল নারিনের ৫৬ বলে ১০৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস, অঙ্গকৃশ রঘুবংশী, রিঙ্কু সিংদের ক্যামিও। রাজস্থান রয়্যালসকে ২২৪ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটিং বিভাগ দুর্দান্ত। কেকেআরের বিরুদ্ধে জস বাটলার ছাড়া টপ অর্ডার ব্যর্থ। বাটলারকে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামানো হয়েছিল। তিনিই ইমপ্যাক্ট ফেললেন।
বিশাল রান তাড়ায় পাওয়ার প্লে-তেই যশস্বী জয়সওয়াল ও সঞ্জু স্যামসনের উইকেট হারায় রাজস্থান। আন্দ্রে রাসেলের অনবদ্য ক্যাচে রিয়ান পরাগকে ফেরান হর্ষিত রানা। ইনিংসের ১৩তম ওভারে পরপর অশ্বিন ও রাজস্থানের গত ম্যাচের নায়ক শিমরন হেটমায়ারের উইকেট নেন মিস্ট্রি স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। সেঞ্চুরির পর বল হাতেও অনবদ্য সুনীল নারিন। ধ্রুব জুরেলের উইকেট নেন তিনি। ১২১ রানে ৬ উইকেট হারালেও রাজস্থানের ভরসা ছিলেন জস বাটলার।
শেষ ৫ ওভারে রাজস্থানের প্রয়োজন ছিল ৭৯ রান। বাটলারের সঙ্গে ক্রিজে রোভম্যান পাওয়েল। ম্যাচ তখনও পুরোপুরি কেকেআরের নিয়ন্ত্রণে বলা যায়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন রোভম্যান পাওয়েল বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করলেও তাঁকে দ্রুতই ফেরান নারিন। কিন্তু বাটলার তখনও ক্রিজে। সেটাই ভয়ের কারণ ছিল কেকেআরের। ফিল সল্টের মিস ফিল্ডিংয়ে রাজস্থানের সুবিধা হয়। ১২ বলে মাত্র ২৪ রানের টার্গেট দাঁড়ায় রাজস্থানের।
জস বাটলার যে একাই ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন, এ মরসুমে টের পেয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দলকে জিতিয়েছিলেন। ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সও তাঁর দাপটের শিকার। শেষ ওভারে ৯ রান টার্গেট দাঁড়ায় রাজস্থানের। বোলিংয়ে বরুণ চক্রবর্তী। প্রথম বলেই ছয় মেরে ৫৫ বলে সেঞ্চুরি বাটলারের। টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি। তিনটি ডট বলে চাপে পড়ে রাজস্থান। ২ বলে ৩ রান লক্ষ্য দাঁড়ায়। ডাবল নিয়ে স্কোর সমান করেন বাটলার।
শেষ বলে ১ রান প্রয়োজন। মিস করলেই সুপার ওভার। তবে সেটা হল না। আইপিএলে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল রাজস্থান রয়্যালস। মিডল ওভারে অনবদ্য ভাবে ম্যাচে থাকলেও বাটলারের কাছে হার কেকেআরের। বাটলারের ৬০ বলে ১০৭ রানের অপরাজিত অবিশ্বাস্য ইনিংসে ২ উইকেটে জয় রাজস্থানের।