প্রকাশ্যেই তৃণমূলের কোন্দল!
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সামনেই হাওড়ার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীকে জাপটে ধরে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির বিরুদ্ধে। হাওড়া ক্রিসমাস কার্নিভালের উদ্যোগ নিয়েছিলেন হাওড়া পুর নিগমের প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী। কিন্তু বুধবার হাওড়ার পুর্ননির্মিত ইকো পার্কের বাইরে গাড়ির পার্কিং ফি তোলা নিয়ে অশান্তির জেরে বন্ধ করার সিদ্ধা ন্ত নেওয়া হয়েছিল ক্রিসমাস কার্নিভাল।
বৃহস্পতিবার বেলায় হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম হেলিপ্যাড থেকে রওনা দেওয়ার আগে বুধবার বন্ধ করে দেওয়া হাওড়া ক্রিসমাস কার্নিভাল অবিলম্বে চালু করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার নির্দেশ পাওয়ার পরই বন্ধ কার্নিভাল চালু করতে ময়দানে নামেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি হাওড়ার ইকো পার্কে আসেন। পার্কে ঢোকার মুহূর্তে তার সঙ্গে ছিলেন হাওড়া পুর নিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী ও মধ্য হাওড়ার বিধায়ক ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। অভিযোগ, মন্ত্রী পার্কের ভিতর ঢুকে গেলেও আচমকাই মন্ত্রীর পিছনে থাকা সুজয় চক্রবর্তীকে পিছন থেকে হাত দিয়ে টেনে ধরে যেতে বাধা দেন মনোজ।
এর পরই দুই নেতার গোষ্ঠীর লোকেরাই একে অপরের দিকে তেড়ে আসে। সুজয় চক্রবর্তীকে লক্ষ্য করে ‘চোর, চোট্টা’ শ্লোগান দেন মন্ত্রী মনোজের অনুগামীরা। যদিও উপস্থিত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সুজয় চক্রবর্তী ও মনোজকে নিয়ে ভিতরে ঢুকে পরিস্থিতি সামাল দেন । অবশ্য পার্কের মঞ্চের সামনে দুই নেতার গোষ্ঠীর লোকেদের মধ্যে বাদানুবাদ চলতে থাকে। ঘটনাস্থলে হাওড়ার মুখ্য নগরপাল প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী সহ পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক- সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে এসে সুজয় চক্রবর্তী ও মনোজ তিওয়ারির গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে যথেষ্টই বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। যদিও প্রকাশ্যে আসা এই বিবাদ পারিবারিক বিবাদের মতোই দাবি করে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘সব পরিবারেই বিবাদ থাকলেও তা মিটে যায়, এখানেও দুইজন স্বাধীন চেতার মানুষ কাজ করছেন, যা মত পার্থক্য ছিল তা দলের নির্দেশে মিটে গেছে। ছোট স্থানে ভিড়ের জন্য পায়ে পায়ে লেগে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল তা আর নেই। কার্নিভালে আসা মানুষকে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য টাকা দিতে হবে না। কার্নিভাল জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে।’
যদিও বুধবার থেকে এই মেলার অচলাবস্থার জন্য দুই নেতার গোষ্ঠীদ্বন্দকেই দায়ী করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই জানান, ‘ মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরেও। মন্ত্রী বা পৌর প্রসাশক কেউ কাউকে মানছে না। সেখান থেকে হাজার হাজার টাকা পাওয়ার ব্যাপার রয়েছে। আর যেখানে টাকা উপার্জন করার জায়গা আছে সেখানে তৃণমূলের নেতারা কাউকে চেনে না, কারণ দলটার নাম তোলামূল।’
বৃহস্পতিবার হাওড়ার কার্নিভাল নিয়ে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘যাঁরা গন্ডগোল করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ইতিমধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এসব কাজ আমি বরদাস্ত ও সাপোর্ট করি না। কার্নিভাল কমিটিকে বলেছি আজই কার্নিভাল চালু করতে হবে। পার্কিং নিয়ে সমস্যা হলে প্রশাসনকে জানানো দরকার ছিলো। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বলেছি এসে কথা বলতে।’