১৪ জুন পর্যন্ত জেল হেপাজতের নির্দেশ সুজয় কৃষ্ণের, প্রমাণ লোপাটের নির্দেশের অভিযোগ আনল ইডি

আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সুজয়কৃষ্ণের জেল হেপাজতের নির্দেশ আদালতের। বুধবার আদালতে ইডির তরফ থেকে দাবি করা হয়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি জড়িত, যাঁরা সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। সেই মামলার তদন্ত ঘেঁটে দেওয়ার জন্য বা ভুল পথে পরিচালিত করার জন্য সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষক পদে বেআইনি নিয়োগের মাধ্যমে যে প্রসিডস অব ক্রাইম তৈরি হয়েছে, সেগুলি লুকানোর চেষ্টা করেছেন সুজয়কৃষ্ণ।
শুধু তাই নয়, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেপ্তারির পর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য মিলল ইডি-র তরফ থেকে। ইডি সূত্রের খবর, তাপস মণ্ডল তদন্তকারীদের জানিয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত অপর অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের। ইডি সূত্রের দাবি, তাপস মণ্ডল জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালের টেটের জন্য কুন্তল ৭০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন কালীঘাটের কাকুকে অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণকে। আবার এই সুজয়কৃষ্ণর নির্দেশেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরাসরি ১০ লাখ টাকা দেন কুন্তল। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের যোগ রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। ইডি সূত্রের দাবি, তদন্তকারী সংস্থার কাছে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট রয়েছে। অ্যাডমিট কার্ড, মার্কশিট এসব নানা ইস্যুতে মানিকের সঙ্গে যোগ ছিল কালীঘাটের কাকুর। অথচ ইডি সূত্রে খবর, এখন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের দাবি, তিনি এসব কিছুই জানেন না।
পাশাপাশি আরও একটা তথ্য সামনে আনা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। কালীঘাটের কাকুর বাড়িতে ইডি যেদিন হানা দেয় সেদিন সেদিন রাহুল বেরা নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতেও অভিযান চালায় এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।আর এই প্রসঙ্গেই ইডির দাবি, এই রাহুল বেরা হল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, যাবতীয় ইলেকট্রনিক্স ডেটা ডিলিট করার জন্য রাহুল বেরাকে বলেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ।
একইসঙ্গে ইডি-র তরফে এও জানানো হয়েছে, মোট চার ধরনের ডেটা ডিলিট করা হয়েছে। ফাইল অ্যাকুইজিশন, ডেটা মোবাইল, সিস্টেম অ্যাকুইজিশন ও ফিজিক্যাল অ্যাকুইজিশন। ইডির বক্তব্য, যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট তাঁদের হাতে এসেছে, তা থেকেই মানিক ও কালীঘাটের কাকুর সম্পর্ক প্রমাণিত। কিন্তু এখন সমস্ত কিছু অস্বীকার করছেন সুজয় ভদ্র।
এদিকে বুধবার আদালতে কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণর আইনজীবী দাবি করেন, এই গ্রেপ্তারি ও বাড়িতে তল্লাশির বিষয়টিই বেআইনি। ডেটা এক্সটরশন কোনওভাবে গ্রেপ্তারির কারণ হতে পারে না বলেই দাবি সুজয় ভদ্রর আইনজীবীর। তাঁর বক্তব্য, যথাযথ নিয়ম মেনে তাঁর মক্কেলের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়নি। কোনওরকম আইনি অনুমতিপত্র ছাড়াই তাঁর মক্কেলের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল বলে দাবি কালীঘাটের কাকুর আইনজীবীর। তাঁর বক্তব্য, ইডি নিজেদের ‘ইগো’কে তৃপ্ত করতে তাঁর মক্কেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 13 =