ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরের ভিতরটা। জানলা দিয়ে যাতে আলো, হাওয়া না ঢোকে তার জন্য সব জানলা মোটা প্লাস্টিকে ঢাকা। ঘরে অক্সিজেন ঢোকার কোনও উপায় ছিল না। একেবারে নিশ্চিদ্র অন্ধকূপে পরিণত করে ফেলা হয়েছিল গোটা ঘর। ভিতরে তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়। গোটা ঘর যেন একটা গ্যাস চেম্বার (Gas Chamber)।
ঘরে ঢুকেই পুলিশের চোখে পড়েছিল ডায়েরির কয়েকটি ছেঁড়া পাতায় ইংরেজি হরফে লেখা— ‘টু মাচ ডেডলি গ্যাস… কার্বন মনোক্সাইড ইনসাইড’ (চরম বিষাক্ত গ্যাস… কার্বন মনোক্সাইড)। পরের লাইনে লেখা—‘ডু নট লাইট ম্যাচেস অর লাইটার আফটার ওপেনিং দ্য ডোর’। তার ঠিক কয়েক হাত দূরেই নিথর হয়ে পড়ে ছিলেন বছর পঞ্চাশের এক মহিলা এবং তাঁর দুই মেয়ে। মৃত্যুর আগে সাবধানবাণী! যাতে উদ্ধারকারীরা বিপদে না পড়েন। এমন একটা সুইসাইড নোট দেখে পুলিশও আঁতকে উঠেছে। কতটা ঠান্ডা মাথায় এবং পরকল্পিত ভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে পরিবারটি তা ভেবেই স্তম্ভিত পুলিশ আধিকারিকরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, মহিলার নাম মঞ্জু। তাঁর দুই মেয়ে অংশিকা এবং অঙ্কু। দিল্লির বসন্ত বিহারের বাসিন্দা তাঁরা। স্থানীয়রা মঞ্জুদের সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই তিন জনের দেহ মেলে। মঞ্জুর স্বামী গত বছরের এপ্রিলে কোভিডে মারা যান। তার পর থেকেই পরিবারটি মানসিক অবসাদে ভুগছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। মঞ্জু অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। কেন আত্মহত্যা করল তিন জন, এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।