মেয়ের মৃত্যুর বিচার পেতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী মা, উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমান: মেয়ের মৃত্যুর বিচার পেতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী হলেন এক মহিলা। মৃতার নাম প্রতিমা চট্টোপাধ্যায়। ঘটনা পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার গুপ্তিপুর গ্রামের। মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে শনিবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে কালনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের ধস্তাধস্তি। মৃতদেহ আটকে রেখে পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অভিযুক্ত জামাইকে গ্রেপ্তারের দাবি তুলে মৃতদেহ আটকে রাখেন মৃতার আত্মীয়রা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
মৃত ওই মহিলার স্বামী সুশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এদিন দাবি করেন, মেয়ের মৃত্যুর বিচারের দাবি নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, এলাকার যুবক সৌম চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। জামাই সৌম চক্রবর্তী সুস্মিতাকে দিয়ে নীল ছবি তৈরি করতেন। সুস্মিতা বাধা দিলেও সৌম শুনতেন না। উলটে তাঁর ওপর অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। বাপের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন সুস্মিতা। অবশেষেগত ৮ জুন বাপের বাড়িতে এসে বাথরুমে ঢুকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তাঁর মেয়ে।
তাঁর অভিযোগ, বাহুবলের সাহায্যে বাড়ির দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে কালনা থানা ও বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিশ নিয়ে যায়। এমনকি দেহ উদ্ধারের জন্য পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়। তাঁর আরও দাবি, গতকাল কোর্টের রায় অনুযায়ী গুপ্তিপাড়ায় মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে তাঁর মেয়েকে দেওয়া সমস্ত জিনিস উদ্ধারে গেলে, সেখানেও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। বুলবুলিতলা ফাঁড়ির এক পুলিশও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। এরপরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তাঁর স্ত্রী এদিন সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। পরিবারের তরফ থেকে কেউই এদিন কালনা হাসপাতালে হাজির হয়নি শনিবার বিকেল চারটে পর্যন্ত।
পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, যতক্ষণ না পুলিশ সমস্ত গয়না উদ্ধার করছে ও জামাই সৌম্যকে গ্রেপ্তার করছে, ততক্ষণ তাঁরা মৃতদেহ নেবেন না। তাতে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে যা খুশি করতে পারে। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক তিনি জানান, ঘটনার পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানে পুলিশ হাজির হয়েছিল। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 5 =