‘বড় ষড়যন্ত্রে যুক্ত সুবীরেশ’, আদালতে সওয়াল সিবিআই আইনজীবীর

কলকাতা:এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতিতে বড় ষড়যন্ত্রে যুক্ত সুবীরেশ ভট্টাচার্য।  এই ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করতে তাঁকে নিজেদের হেপাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাল সিবিআই। এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সোমবার সন্ধেয় গ্রেপ্তার করে সিবিআই। সুবীরেশ ভট্টাচার্য যদিও দাবি করেছেন, তাঁর আমলে এসএসসি নিয়োগে কোনও ত্রুটি হয়নি।

মঙ্গলবার সুবীরেশকে আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জন্য হেপাজেত নেওয়ার আবেদন জানায় সিবিআই। ৬ দিনের সিবিআই হেপাজত মঞ্জুর করে আদালত। ২৬ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে।

নবম-দশম শ্রেণির সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে বড় ভূমিকা ছিল সুবীরেশ ভট্টাচার্যের। এই অভিযোগে সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মঙ্গলবার বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয় তাঁকে। হবে।এদিন আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন, নবম-দশম শ্রেণির সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। তিন হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে প্রতারণা করা হয়েছে। অথচ জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলছেন কিছু জানেন না। তদন্তকারীদের ভুলপথে চালনা করছেন সুবীরেশ। তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলেও দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীদের। পালটা যুক্তি দেন সুবীরেশের আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় এবং রূপরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা বলেন, ‘কোন সময়ে এই দুর্নীতি হয়েছে তা কোথাও উল্লেখ করেনি সিবিআই। কীভাবে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র হল তাও উল্লেখ করা হয়নি। আমাদের মক্কেলকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে।’ দুই আইনজীবীর দাবি, এসএসসি আসলে কমিশন। কোনও কমিশন এককভাবে কাজ করতে পারে না। উপরওয়ালাদের নির্দেশ মানতে হয়। সেখানে আরও ক্ষমতাবান অফিসাররা ছিলেন। তাহলে কেন তাঁদের মক্কেলকে একা দায়ী করা হচ্ছে ? সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক বলেন, ‘সেটাই তো বলা হচ্ছে। এটা বৃহত্তর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র।’

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য ২০১৪-২০১৮ সাল পর্যন্ত ৪ বছর স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বিচারপতি রঞ্জিত বাগ কমিটির রিপোর্টে নাম রয়েছে তাঁর। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৩৮১টি ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেয়নি। এনিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চলছিল। তাঁর ওপর নজর ছিল সিবিআইয়ের। গত ২৪ আগস্ট সরাসরি সুবীরেশের ফ্ল্যাটে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কোয়ার্টার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দপ্তরেও অভিযান চলে। পরে বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাট সিল করে দেওয়া হয়। দফায় দফায় জেরা করা হয় সুবীরেশকে। সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 2 =