খিদের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে খুদে মেয়েটি একটি মিষ্টি মুখে তুলেছিল। আর যায় কোথায়। মেয়েটিকে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দিলেন তার কাকিমা। এই ঘটনা একদিনের নয়, প্রতিদিনই হুগলির গোঘাট ভগবতী গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়ার ওপর এভাবেই চলে অমানবিক অত্যাচার। এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর কাকিমাকে গ্রেপ্তার করেছে গোঘাট থানার পুলিশ। ধৃত মহিলার নাম সারদামণি চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ওই মহিলাকে আরামবাগ মহকুমা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটির বাড়ি গোঘাটের কুমুড়শা গ্রামে। উল্লেখ্য, কোনওদিনই দু’বেলা পেটপুরে খেতে পায়নি খুদে পড়ুয়াটি। স্কুলে এলে মিড ডে মিলের ভাতই তার পেট পুরে খাওয়ার অন্যতম রসদ। বাড়ির বাসন মাজা, কাপড় কাচা থেকে শুরু করে সব কাজই করতে হয় এই ছোট মেয়েটিকে। আসলে ছোট্ট মেয়েটির বাবা কয়েক বছর আগে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, এক রত্তি মেয়েকে ফেলে মা পালিয়ে গেছে অন্যত্র। কাকা কাকিমার গলগ্রহ হয়ে থাকতে হচ্ছিল খুদে পড়ুয়াকে। তাই এই অত্যাচার। বুধবার স্কুলে এসে মেয়েটি এক কোণে চুপ করে বসে ছিল। দিদিমণিদের সন্দেহ হয়। তাকে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে। মেয়ের পিঠে দগদগে পোড়া দাগ দেখে চমকে ওঠেন দিদিমণিরা। মেয়েটিকে গোঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। খবর দেওয়া হয় বিডিওকে। চাইল্ড লাইনের লোকজন সঙ্গে সঙ্গে এসে উপস্থিত হয়। আপাতত মেয়েটিকে তার দাদুর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এক নম্বর ব্লকের বিডিও সম্রাট বাগচি বলেন, আমরা খবর পাওয়ার পরেই ছাত্রীটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই এবং চাইল্ড লাইনে খবর দেওয়া হয়। ছোট মেয়েটি ভয়ে ছিল। আমরা ওর পাশে আছি। কোনও অসুবিধা যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপরদিকে গোঘাট থানার ওসি শৈলেন্দ্র উপাধ্যায়ের মানবিক কাজকে সাধুবাদ জানায় এলাকার মানুষ। তিনি ছোট স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি পাশে থাকার বার্তা দেন।
অন্যদিকে মেয়েটির দাদু বলছেন সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার কারণেই নাতনির উপর এই অত্যাচার। সবমিলিয়ে সমস্ত ঘটনা সামনে আসতে নিন্দার ঝড় জেলাজুড়ে।