কাবুলের চিনা হোটেলে জোরালো বিস্ফোরণ, বন্দুকধারীদের হামলা

সোমবার ফের জোরালো বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিস্ফোরণের শব্দটি এসেছে কাবুলের এক চিনা গেস্টহাউসের কাছ থেকে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলার শব্দও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ‘খুব জোরালো বিস্ফোরণ ঘটে। তারপর প্রচুর গুলি চলার শব্দও পাওয়া গিয়েছে।’ উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে তালিবানরা ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে কাবুলে চিনা ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়েছে। তালিবান শাসনকে স্বীকৃতি না দিলেও, কাবুলে দূতাবাস খোলা রেখেছে চিন সরকার।
ভারতীয় সময় বিকেল চারটের আশপাশে ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর। কাবুলের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে বিস্ফোরণের আওয়াজ আসে কাবুলের কেন্দ্র স্থল ‘শহর-এ-নও’-এর একটি হোটেল থেকে। তার পর সেখান থেকেই পাওয়া যায় গুলির শব্দও। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে ওই হোটেলের জানলা থেকে বেরিয়ে আসছে আগুনের লেলিহান শিখা। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে এলাকা। এই ঘটনায় আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর তরফে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে টুইটার এবং বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই হোটেলের ভিতরে অন্তত ছ’জন সশস্ত্র ব্যক্তি রয়েছেন।

সূত্রের খবর, হোটেলটির নাম লংগান হোটেল। চিনা ব্যবসায়ী ও অন্যান্য নাগরিকরা কাবুলে এসে সাধারণত এই আট তলা হোটেলেই ওঠেন। এর জন্য, হোটেলটি চিনা হোটেল নামেই পরিচিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিদেশি নগরিকদের উপস্থিতির কারণে হোটেলটি কড়া নিরাপত্তায় মোড়া থাকে। কিন্তু, সেই কড়া নিরাপত্তার মধ্য়েও কয়েকজন সশস্ত্র হামলাকারী হোটেলের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই আফগানিস্তানে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইউ, তালিবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কাবুলের কুটনীতিক এবং দূতাবাসগুলির নিরাপত্তা জোরদার করার দাবি জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনার সঙ্গে এদিনের হামলার কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ধারাবাহিক গুলির শব্দ এবং বিস্ফোরণের পর অবশ্য ওই হোটেলের পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। শুধু টুইটারে ভেসে ওঠা একটি ভিডিয়োয় হোটেলটির একটি ফ্লোরের জানলার ভিতর থেকে দাউ দাউ আগুন জ্বলতে দেখা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, কাবুলের হোটেলটিতে আগুন জ্বলছে। পিছনে একের পর এক বন্দুক চলার শব্দ শোনা যাচ্ছে। আরেকটি ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সশস্ত্র জঙ্গিদের হাত থেকে বাঁচতে হোটেলের জানালা দিয়ে পালাচ্ছেন হোটেলের অতিথিরা। অনেককে হাত ধরে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে নিচে ঝাঁপ মারছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − sixteen =