কলকাতা: ডিএ মামলায় ফের রাজ্যের আর্জি খারিজ হয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে, মহার্ঘ ভাতা সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য। তাই বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেটাই বহাল রাখল আদালত। এ নিয়ে তৃতীয় বার রায় পুনর্বিবেচনার রাজ্যের আর্জি খারিজ করা হল আদালতে। ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষেই এই রায় গেল। এ নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের আবেদনের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে সরকারি কর্মীদের। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর গত ২০ মে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যাতে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হয়। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত অগস্ট মাসেই সেই তিন মাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপর রাজ্যের তরফে নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়। সেই মামলারই রায় দেওয়া হল এ দিন।
আদালতের তরফে এ দিন স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ‘রাজ্য সরকারের আর্জির কোনও মেরিট নেই।’ ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, পুনর্বিবেচনার আর্জিকে মান্যতা দেওয়া হবে না, দীর্ঘ শুনানি শেষের পর কোর্টের দায়িত্ব নয়, কী ভুল আছে তা খুঁজে বের করা। রাজ্যের যাবতীয় যুক্তি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে এ দিন। রাজ্য যে স্ক্রুটিনি করার কথা বলছে, তার আর প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই মামলার শুনানি পর্বে হাই কোর্টকে রাজ্য জানিয়েছিল, তহবিলে টাকা নেই বলে উচ্চ হারে ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু রাজ্যের এই যুক্তি আগেও গ্রাহ্য করেনি ডিভিশন বেঞ্চ। প্রসঙ্গত,কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে অতীতেও মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। হাই কোর্টে রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছিল, ডিএ কর্মীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার। চলতি বছরের ২০মে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্ত সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়।
এদিকে, এও প্রশ্ন ওঠে ডিএ বকেয়া রেখে রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দিচ্ছে কীভাবে? যদিও ‘রোপা রুল’ মেনে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা মিটিয়েও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য।সেই প্রসঙ্গে এ দিন মামলাকারী সরকারি কর্মী সংগঠনের এক সদস্য বলেন, এটা অত্যন্ত লজ্জার।