কলকাতা: পুজোর মুখে পুজো অনুদান নিয়ে কাটল অস্বস্তি।পুজোয় রাজ্য সরকারের অনুদান নিয়ে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এমনটাই জানিয়েও ছটি নির্দেশিকা দিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন প্রায় ৪৩ হাজার ক্লাবকে ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে সরকারি অনুদান। আগের বছরগুলিতে তা ছিল ৫০ হাজার টাকা। এ বছর ১০ হাজার টাকা বাড়তি অনুদান পেয়ে স্বভাবতই আরও খুশি ক্লাবকর্তারা। তবে প্রশ্ন ওঠে রাজ্যে যেখানে বকেয়া ডিএ সেখানে পুজোর নামে প্রায় ২৫৮ কোটি টাকা কেন খরচ হবে? পুজো অনুদানের বিরোধিতায় চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। এ নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হওয়ায় চিন্তিত ছিল ক্লাবগুলিও।
এদিন এ ব্যাপারে আদালত হস্তক্ষেপ না করলেও ছ’টি নির্দেশিকা দিয়েছে। তবে কোনও ৬টি শর্তে অনুদানের অনুমতি পেল রাজ্য, তা এখনও স্পষ্ট করেনি উচ্চ আদালত। নির্দেশনামা হাতে পেলেই তা বোঝা যাবে বলে জানাচ্ছেন মামলাকারীর আইনজীবীরা। মনে করা হচ্ছে, একটি গাইডলাইন বেঁধে দিতে চায় আদালত। তবে উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, শর্ত যাই-ই হোক, তা মেনেই রাজ্য সরকার পুজোয় অনুদান দিচ্ছে। সেই টাকা ভালভাবে পুজোর আয়োজনে কাজে লাগাতে চান তাঁরা। এর আগে আদালতে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের জন্য রাজ্যের মানুষের করের টাকা এই ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খরচ করতে পারেন না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী। এর জন্য রাজ্যপালের অনুমতি লাগে। পালটা সওয়ালে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘পুলিশ-প্রশাসন ও জনসাধারণের সংযোগ বৃদ্ধির কাজ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচার ও প্রসার এবং পর্যটনের প্রসার এই পুরো বিষয়টিই করা হয় জনস্বার্থে। রাজ্যের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ ও তার প্রচার করাই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য। এটাকে জনস্বার্থ ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে?’ সওয়াল-জবাব শেষে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন। মঙ্গলবার সেই রায় রাজ্যের পক্ষেই গেল।