শ্রীরামপুরে রাজা রামমোহন রায়ের মামার বাড়িতে ঐতিহ্য মেনে হয়ে আসছে দশভুজার আরাধনা

চাতরার দেশগুরু ভট্টাচার্য বাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদন, শ্রীরামপুরঃ লোক মুখে কথিত আছে, শ্রীরামপুরের চাতরার দেশগুরু ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো শ্রীরামপুর শহরের সবথেকে প্রাচীন পুজো।বাঙালির নবজাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায়ের নাম জড়িয়ে রয়েছে এই পুজোয়। ভট্টাচার্য পরিবারের দাবি,  এই পুজোর বয়স ৬০০ বছর পেরিয়েছে। ইংরেজ শাসনের আগে যে বাড়িতে পুজো হতো, তার স্থান পরিবর্তন হয়েছে। এখন যে বাড়িতে পুজো হচ্ছে সেটাও ৩০০ বছর হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি,  একসময় দেশগুরু ভট্টাচার্যের বাড়ি টোল হিসেবে পরিচিত ছিল। দুর্গাপুজোর সময় দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা নৈবেদ্য নিয়ে আসতেন,  তা দিয়েই হতো পুজোর আয়োজন। বছর কুড়ি আগে টোল-প্রথা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। তবে দুর্গাপুজো এখনও চলছে। পরিবারের সদস্যরাই এখন এই পুজো চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশগুরু ভট্টাচার্য বাড়ি,  রাজা রামমোহন রায়ের মামার বাড়ি।পরিবারের দাবি, রাজা রামমোহন রায়ের মা তারিণী দেবী ছিলেন এই বাড়ির মেয়ে। ছোটবেলায় রাজা রামমোহন রায় বেশ কয়েকবার পুজো কাটিয়েছিলেন তাঁর মামার বাড়িতে।কালের নিয়মে দুর্গাপুজোর জৌলুস আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু পুজোর পরম্পরা একই রয়েগিয়েছে। পরিবার সূত্রে আারও দাবি,  ঠাকুরদালানে থাকা বংশ তালিকা দেখলেই এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়। শ্রীরামপুরে এখনও পর্যন্ত দশমীর দিন দেবী প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে সবার আগে ভট্টাচার্য বাড়ির দেবী প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। তারপরে অন্য দেবী প্রতিমা নিয়ে আসা হয় গঙ্গায় নিরঞ্জনের জন্য। পুজোর সমস্ত ভোগের রান্নার দায়িত্ব থাকে পুরোহিতদের উপরে। সমস্ত রান্না হয় গঙ্গা জল দিয়ে। পুজোর ভোগ রান্নার জন্য এখনও ব্যবহার করা হয় কাঠের উনুন ও বিশেষ বাসনপত্র। এক সময়ে দেশগুরু ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো শুরু হয়ে যেত মহালয়ার দিন থেকেই। এখন পুজো হয় ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =