৬০৩ শিক্ষকের বদলির নির্দেশ স্থগিত নিয়ে শুরু জল্পনা

শিক্ষক বদলির নির্দেশ জারি করেও আপাতত ধীরে চলো নীতি যেন নিতে দেখা গেল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে। কারণ, সূত্রে খবর, গোটা প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে নির্দেশ পাঠানো হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। তবে ঠিক ছিল, স্কুলে গরমের ছুটির পর বদলির নির্দেশ কার্যকর হবে। গত ১৫ জুন স্কুল খুলেছে। সেই দিনই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার নির্দেশ জারি হয়।
প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে প্রথম দফায় ৬০৩ জন শিক্ষকের প্রশাসনিক বদলির নির্দেশ গিয়েছিল পর্ষদের কাছে। আপাতত তা কার্যকর হচ্ছে না। আর এই বদলির নির্দেশ ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। বিষয়টি আদালতের নজরেও আনা হয়। এমন অভিযোগও ওঠে, ডিএ-র দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেছে বেছে বদলি করা হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন অভিযোগ করে, প্রতিহিংসাবশতই রাজ্য সরকার শিক্ষকদের বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হয় তাঁদের তরফ থেকে। এদিকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, পদ্ধতি মেনেই এই বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বিশেষ কোনও অংশকে বেছে এই নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এদিকে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এই মামলার শুনানি চলে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে। ১৩ থেকে ১৬ জুন, টানা চার দিন ধরে চলে এই শুনানি। এরপরই আদালত পদ্ধতিগত প্রশ্ন তুলে রিপোর্ট তলব করে রাজ্যের কাছে। মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা সোমবার অর্থাৎ ১৯ জুন। এদিকে গত বৃহস্পতিবারই নির্দেশ বদলির স্থগিত রেখে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে। তবে হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। এখানে নানা মুনির নানা মত। কারও ধারনা, এটা আদালতের চাপে আবার কেউ বলছেন এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ। এদিকে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, তালিকায় থাকা বহু শিক্ষক বদলির নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন পর্ষদের কাছে। সেখানে কেউ অসুস্থতাজনিত কারণের পাশাপাশি দূরত্বজনিত অসুবিধার কথাও তুলে ধরে বিষয়টি পুনরায় ভেবে দেখার আবেদন জানিয়েছেন। স্কুলশিক্ষকদের সেই সব আবেদন খতিয়ে দেখার জন্যই নির্দেশ স্থগিত রাখার এই সিদ্ধান্ত বলে ওই সূত্রের দাবি।
তবে একাংশের ধারনা, এই বদলি স্থগিতের এই নির্দেশের পিছনে আদতে রয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। নির্বাচন পর্বে শিক্ষকদের ভোটের কাজে প্রয়োজন হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। এর সঙ্গে বদলির প্রক্রিয়া জারি থাকলে তাতে অসুবিধা হতে পারে ভোটের কাজে। তাই এটি বদলি কার্যকরের সঠিক সময় নয় বলে বুঝতে পেরে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বদলির নির্দেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + 6 =