মঙ্গলবার দিল্লিতে তৃণমূলের মেগা-কর্মসূচি। যন্তর মন্তরে অবস্থানে বসবেন দলের সাংসদ, বিধায়ক, নেতা-মন্ত্রীরা। এই কর্মসূচির নেতৃত্বে রয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে এদিন আবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেককে। যদিও ইতিমধ্যেই অভিষেক তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, দিল্লির কর্মসূচিতে থাকবেন তিনি।
এদিকে ইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে অভিষেক যে হাজিরা দিচ্ছেন না সে ব্যাপারে সোমবার রাত অবধি সেরকম কোনও তথ্য তাদের কাছে লিখিত আকারে জানানো হয়নি। ফলে ইডি তদন্তকারীরা অভিষেকের হাজিরার সম্ভাবনা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছেন। ওদিকে হাইকোর্টেরও নির্দেশ রয়েছে, এই নোটিসের বিষয়টি কার্যকর করতে হবে ইডিকে। প্রসঙ্গত, বিচারপতি অমৃতা সিনহা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির অধিকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘৩ অক্টোবরের অনুসন্ধান এবং তদন্ত যাতে ব্যাহত না হয়’ তা দেখার জন্য। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অভিষেকের হাজিরা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরই নাম না করে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিনহা।
এদিকে অভিষেক যদি দিল্লিতেই দিনভর কর্মসূচিতে থাকেন, তাহলে কীভাবে হাইকোর্টের নির্দেশ ইডি কার্যকর করবে তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ আছে। কারণ, অভিষেক হাজিরা না দিলে আদালতের নির্দেশ কার্যকর হবে না।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য দিল্লিতে থাকার কথা বলে মঙ্গলবারের হাজিরা এড়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে চিঠি বা ইমেল পাঠাতে পারেন ইডি দফতরে। আবার এমনও হতে পারে, দিল্লির কর্মসূচি শেষ করে আজই ফিরতে পারেন কলকাতা। সেক্ষেত্রে হাজিরা দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীদের একাংশ। এটা করলে তদন্তে সহযোগিতা করা ও আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা, দুই-ই হবে। যার আইনি সুবিধাও পরবর্তীতে অভিষেকের পক্ষে যেতে পারে।
যেহেতু অভিষেকের ক্ষেত্রে হাজিরা এড়িয়ে যাওয়ার রেকর্ড নেই বললেই চলে, সেক্ষেত্রে হাজিরা এড়ালেও কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কার্যত ক্ষীণ। সেক্ষেত্রে ফের তাঁকে নোটিস দিতে পারে ইডি। এদিকে আবার হাইকোর্ট তদন্তকারী অফিসার বদল করার নির্দেশও দেওয়ার পর যিনি এই দায়িত্বে থাকবেন সেই আধিকারিকই এই নোটিস পাঠাতে পারেন বলে ধারনা আইন বিশেষজ্ঞদের।
এদিকে ইডি কৌশলী পদক্ষেপও করতে পারে। অভিষেক যদি দিল্লিতে থাকার কথা জানিয়ে হাজিরা এড়ানোর চিঠি দেন, সেক্ষেত্রে মাস্টার স্ট্রোক দিতে পারে ইডি। অভিষেককে দিল্লিতেই ইডির সদর দফতরে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তাব দিতে পারে তারা। এটা করলে হাইকোর্টের নির্দেশকে কার্যকর করতে ইডি যে কতটা সচেষ্ট, সেই বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারবে। এদিকে আবার এ খবরও মিলছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।