ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে একঝলক দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে ইরান। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এর আগে খেলার সুযোগ মিলেছে। কিন্তু পার্সিপোলিস এফসির ভক্তরা, বিশেষ করে ফুটবল ভক্তরা মুখিয়ে রয়েছেন সিআর সেভেনের জন্য। বিশ্বের অন্যতম সেরা সুপার ১৯ সেপ্টেম্বর তেরহানে খেলবেন। আল নাসেরের বিরুদ্ধে পার্সিপোলিস কেমন খেলে, তার থেকেও বড় চর্চা চলছিল, রোনাল্ডোর মতো তারকারা কি আদৌ ইরানের মতো অবরুদ্ধ দেশে যাবেন খেলতে? জটিলতা কাটানোর জন্য ইরান সরকার বিশেষ সুবিধা দিতে চলেছে আল নাসেরের ফুটবলারদের। মূলত রোনাল্ডো যাতে ইরানে পা দেন, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। আর তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছে ইরানিদের মধ্যে। দেশের জনতা যে সুবিধা পান না, তা কেন দেওয়া হবে রোনাল্ডোকে, প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ইরানে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে রয়েছে কড় নিয়ম। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশি হেফাজতে মাসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশের নানা জায়গার পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিরুদ্ধবাদীরা সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে রেখেছেন। সরকারবিরোধী নানা গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অধিকাংশ ওয়েবসাইট সেখানে খোলা যায় না। বিশেষ করে হোয়্যাটস অ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম খোলা যায় না। এমনকি ভিপিএন ব্যবহার করে যাতে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে ঢুকতে না পারে আমজনতা, তা কড়া নজরে রাখে ইরানের টেলিকম বিভাগ। এমন পরিস্থিতি থাকলে রোনাল্ডো সহ আল নাসেরের অন্যান্য তারকারা ইরানে নাও আসতে পারেন, এমন আশঙ্কাতেই বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। দেশবাসীর জন্য নিয়ম যাই হোক না কেন, রোনাল্ডো চাইলে যে কোনও ওয়েবসাইট সার্ফ করতে পারেন। তাঁর জন্য বরাদ্দ থাকবে বিশেষ সিম। যতদিন ইরানে থাকবেন, ততদিন এই সুবিধা পাবেন তিনি। পার্সিপোলিস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট রেজা দার্ভিস বলেছেন, ‘আমি দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল কোম্পানি ইরান-সেলের সঙ্গে কথা বলেছি। আল নাসেরের প্লেয়ারদের ব্যবহার করার জন্য বিশেষ সিমকার্ড দিতে চাই, তা ওদের বলেছি। যাতে প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে কোনও অসুবিধা না হয়।’ এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইরানিরা। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, দেশের সরকার তাঁদের জন্য একটা নিয়ম রেখেছে। যেই এ দেশে আসুন না কেন, তাঁকেও এই নিয়মই পালন করতে হবে। রোনাল্ডোকে তা হলে কেন বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু মিলছে না।