একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিলেন সোনালি গুহ। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে তৃণমূলের তরফ থেকে টিকিট না দেওয়ায় যোগ দেন বিজেপিতে। তবে বিজেপিও যে তাঁকে টিকিট দিয়েছিল তা নয়। এরপর তৃণমূলের ল্যান্ড-স্লাইড ভিক্ট্রির পর দলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে কেঁদে ভাসাতেও দেখা গিয়েছিল এই সোনালি গুহকেই। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ‘জল ছাড়া মাছ বাঁচে না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া বাঁচব না।’
যদিও প্রাক্তন বিধায়ক এবং তাঁর বহুদিনের বিশ্বস্ত সঙ্গী সোনালি গুহকে নিয়ে মনোভাব নরম করতে দেখা যায়নি তৃণমূল সুপ্রিমোকে। ২০২১-এর পর কেটে গেছে ২ টি বছর। গত দু’ বছরে সোনালিও কার্যত প্রচারের অন্তরালেই চলে গিয়েছিলেন। বিজেপি-র কোনও কর্মসূচিতেও দেখা যায়নি তাঁকে। এবার সেই সোনালি গুহকেই দেখা গেল শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে হাজরায় ডিএ-র আন্দোলনকারীদের মঞ্চে হাজির হতে। মমতার বাড়ির অদূরে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষও করতে শোনা যায় সোনালিকে।
এদিন মিছিল শেষে যে সভার আয়োজন করা হয় তা নামে অরাজনৈতিক হলেও সেই সভায় হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বক্তব্য রাখার সময়ই সোনালি গুহর কথা উল্লেখ করেন। এরপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুরু থেকেই মমতাকে নিশানা করেন সাতগাছিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক। সোনালি গুহ বলেন, ‘এই মুখ্যমন্ত্রী এক সময় বলেছিলেন, যদি কেন্দ্রের হারে ডিএ না দেওয়া হয়, তাহলে বামফ্রন্টের থাকার দরকার নেই৷ তাহলে দিদি আপনিও কেন্দ্রের হারে দিয়ে দিন, না হলে আপনি পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে যান৷’ এখানেই না থেমে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক যোগ করেন, ‘দিদি আপনিই স্লোগান দিযেছিলেন কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না। আর এখন দিদি তুমি খাবে আর তোমার ভাইপো খাবে, তা হবে না, তা হবে না।’ এরই পাশাপাশি সাতগাছিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক এও স্পষ্ট করে দেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই তিনি ওই মঞ্চে এসেছেন। বিজেপি-র হয়ে ফের সোনালি সক্রিয় হন কি না, সেটাই এখন দেখার। তবে এদিন সোনালির মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়নি তৃণমূল শিবিরের তরফ থেকে।