যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর পর দেখতে দেখতে কেটে গেছে প্রায় ২১ থেকে ২২ দিন। এই ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠেছিল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে। তারই রেশ ধরে বিভিন্ন মহল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও হস্টেলে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর দাবি ওঠে। এদিকে এই সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সবপক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠকের ডাক দেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, গবেষক ও পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে কিছু দাবি তোলা হয় ছাত্র সংগঠনগুলির তরফ থেকে এমনটাই খবর।
সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোথায় কোথায় সিসিটিভি ক্যামেরা তা লিখিতভাবে জানাতে হবে কর্তৃপক্ষকে, বৈঠকে ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে এমন দাবি করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি সিসিটিভি কারা নজরদারি করবে তাও লিখিতভাবে জানানোর দাবি করেন ছাত্র সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা।
এই দাবি সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, ক্যাম্পাসে কোথায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে তা পড়ুয়ারা নির্ধারণ করে দেবেন কি না তা নিয়েই। ছাত্র সংগঠনের এই দাবি মুখে কার্যত নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এমনটাই সূত্রের খবর। পডুয়াদের জানানো হয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই সিসিটিভি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তারপরই তা তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে আবার প্রাক্তন সেনাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় মোতায়েন করার বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছে স্টেকহোল্ডাররা। এই নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনও নেওয়া হয়নি। সূত্রে এ খবরও মিলেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক চললেও সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি এদিন।
এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিটের সভাপতি রাজন্যা হালদার জানান, ‘আমি ধরনের কোনও কিছু শুনিনি এখনও। কোথায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসবে সেটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। কোনও আইনে লেখা নেই যে এটা নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এমন যদি কেউ দাবি করে থাকে সেটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’
উল্লেখ্য, ৯ অগাস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত পড়ুয়াকে র্যাগিং করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে পরিবার। পুলিশি তদন্তে সেই তত্ত্বই আরও জোরাল হয়। তদন্তে নেমে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ও পড়ুয়াসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজন এই মুহূর্তে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। একাধিকবার ঘটনার পুনর্নিমাণ করেছে পুলিশ।