এমডিও প্রজেক্ট চালুর দাবিতে আন্দোলন কিছু জমিদাতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদন, জামুড়িয়া: এলাকায় নানান সমস্যার কারণে চলতি মাসের ১ তারিখ ইসিএলের পড়াশিয়ার এমডিও প্রজেক্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ এবং এক তারিখ থেকেই শুরু হয় প্রজেক্ট থেকে ভারী ভারী মেশিন তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া। ফলে ইসিএলের যেমন কয়লা উৎপাদনের হাজার হাজার টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হত পাশাপাশি এলাকার বহু জমিদাতা, জমির বিনিময়ে চাকরি এবং এলাকায় বহু বেকার সমস্যার সমাধান হত। প্রজেক্ট বন্ধ হলে এই সমস্ত সমস্যায় পড়বেন স্থানীয় বাসিন্দারা তথা জমিদাতারা।
তাই প্রজেক্ট বন্ধ হওয়ার কথা শুনেই রবিবার স্থানীয় জমির মালিকরা বিক্ষোভ দেখান এবং এমডিও প্রকল্প থেকে মেশিনগুলি তুলে নিয়ে যেতে বাধা দেন। আন্দোলনকারীরা জানান, যে কোনও মূল্যে প্রকল্পের কাজ বন্ধ হতে দেওয়া হবে না। স্থানীয় বাসিন্দা তথা জমিদাতা নয়ন গোপ ও মিলন ঘোষরা দাবি করেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে প্রকল্পটি বন্ধের বিষয়ে এলাকায় বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো হচ্ছে। এলাকার জমিদাতাদের অভিযোগ, এই এলাকায় শাসকদলের মন্ত্রী দ্বারা পুষ্ট কিছু ব্যক্তির নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই আজ এই প্রজেক্টটি বন্ধের পথে। তাঁরা চান না এলাকার স্থানীয় বেকার যুবকরা কাজ পান, এলাকায় উন্নয়ন হোক।
এ বিষয়ে স্থানীয় আদিবাসী নেতা ভরত মাড্ডির দাবি, তিনি চান না এখানে এমডিও প্রজেক্ট বন্ধ হোক। কালাচান প্রকল্পটি চলুক তাতে যেমন এলাকায় বেকার সমস্যার সমাধান হবে, পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন হবে। কিন্তু এখানে মানুষ ষড়যন্ত্রে করে প্রজেক্টটি বন্ধ করার চেষ্টা করছে। রবিবার এবং আগামিকাল এই খনির কর্মকর্তারা কখন আসবেন, তাঁদের সঙ্গে বসেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।
এই প্রকল্পের জমিদাতা মিলন কুমার ঘোষ নামে এক ব্যক্তি জানান, শনিবারও এখান থেকে দু’টি মেশিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং এদিনও কিছু মেশিন সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও স্থানীয় লোকজন বাধা দেন। গ্রামবাসী তথা এলাকার জমিদাতারা এই প্রকল্প বন্ধ হতে দেবেন না বলেও দাবি করেন। অভিযোগ করেন, কেউ কেউ সিন্ডিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এই প্রকল্প এখানে চালাতে চান না।
অপরদিকে যাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সেই তরুণকান্তি ঘোষ দাবি করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যে চাদাবাজির অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুল। ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের জন্য যাঁরা এ ধরনের অভিযোগ করছেন, তাঁরা কিছুই করেননি। তাঁরা ২০১৯ সালে এমডিওকে কোনও জমি দেননি। বরং তাঁরাই ২০১৯ সালে এমডিওকে ১৫০ বিঘা জমি দিয়েছিলেন। তারা এই প্রকল্পটি এখানে শুরু করতে চেয়েছিলেন, তাই তাঁরা রেজিস্ট্রেশনের আগেই কোম্পানিকে এখানে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে বলে দাবি করেন।
তাঁর দাবি, জমি রেজিস্ট্রি করার আগে এখানে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। এই তিন কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করানো হচ্ছে স্থানীয় লোকজনের দাবি, স্থানীয়দের কাজ দিতে হবে, কিন্তু শুধুমাত্র পাঁচজন স্থানীয় লোককে কাজ দেয় কোম্পানি। যদিও তাঁরা তাঁদের জয়েনিং লেটার দেবে না বলে জানায়। এখানে কর্মরত ব্যক্তিদের জয়েনিং লেটার না দিলে ভবিষ্যতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের দায়িত্ব কে নেবে? উলটে তিনি অভিযোগ করেন যে, এখানে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে যারা প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকা নেয়।
পাশাপাশি প্রজেক্টের জন্য জমি দিয়েছেন এমন জমিদাতারা দাবি করেন, ‘যে কোনও মূল্যে এখানের এই প্রজেক্ট বন্ধ হতে দেব না। প্রয়োজনে প্রজেক্ট চালুর দাবিতে এখানে আন্দোলনে নামব।’ হাজার হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ঘিরে এলাকায় দু’-তিনটি গোষ্ঠীর দ্ব¨েµর কারণে প্রজেক্টের পাশাপাশি এলাকার বহু মানুষের ও এলাকার উন্নয়ন অন্ধকারের মুখে বলে দাবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − thirteen =