আপনার ওজন কি বেশ বেশি? ঘুমোনোর সময় নাক ডাকেন? মাঝরাতে হঠাত্ ধরফরিয়ে ওঠেন? গলা, মুখ শুকিয়ে যায়? তাহলে, কিন্তু এখনই সাবধান হয়ে যান। কারণ, আপনি হতে পারেন স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত।
স্লিপ অ্যাপনিয়া। এই শব্দটির সঙ্গে কেউ কেউ পরিচিত হলেও, বেশিরভাগই এর নাম শোনেননি। তবে সম্প্রতি সুরকার বাপ্পি লাহিড়ির মৃত্যু এই রোগটিকে চর্চায় নিয়ে এসেছে। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন।
স্লিপ অ্যাপনিয়া কী?
ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা। এতে ঘুমের মধ্যে আচমকাই শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। আবার কিছুক্ষণ পরে চালু হয়। ঘুমোতে ঘুমোতে অনেকেই হঠাত্ ধরফরিয়ে ওঠেন, গলা শুকিয়ে যায়। আসলে আচমকা অক্সিজেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে, তা শুরু করার জন্যই স্বতঃস্ফূর্তভাবে শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। যাতে ফের অক্সিজেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু সেই ঘুম যদি ভাঙতে দেরি হয় বা মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছনো ১০ সেকেন্ডের বেশি বন্ধ থাকে, তাহলেই বিপদ। এক্ষেত্রে প্রাণ সংশয় হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া বিভিন্ন ধরনের হয়।
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া– এটা খুব সাধারণ। বেশিরভাগ লোকই অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভোগেন।অতিরিক্ত ওজন বা অন্যা কারণে গলা ও আশপাশের মাংসপেশি শিথিল হয়ে গেলে, শরীরে অক্সিজেন চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। যার জেরে এই সমস্যা হয়।
সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া- মস্তিষ্ক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী মাংসপেশিকে সঠিক সংকেত পাঠাতে ব্যর্থ হলে এই সমস্যা হয়।
কমপ্লেক্স স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম– অবস্ট্রাকটিভ ও সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া একসঙ্গে দেখা দিলে বিষয়টি জটিল হয়ে যায়। তখন তাকে কমপ্লেক্স স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম বলে।
কেন হয় স্লিপ অ্যাপনিয়া, কাদের হয়?
ওজন যাঁদের খুব বেশি, ঘাড়ের অংশ যাদের একটু বেশি ফোলা তাঁদের ক্ষেত্রে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এছাড়া বয়সের সঙ্গে সঙ্গেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ঘুমনোর সময় অক্সিজেন পৌঁছতে বাধার সৃষ্টি হলেই এটা ঘটে।কারও নাকে সমস্যা থাকলে, অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপানের প্রবণতাও স্লিপ অ্যাপনিয়া তৈরি করতে পারে।হার্টের সমস্যা থাকলে, ডায়াবেটিক হলেও সাবধান হওয়া দরকার। পুরুষদের ক্ষেত্রে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া বেশি দেখা দেয়।
চিকিত্সকের পরামর্শ জরুরি-
সুস্থ জীবন-যাপন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, নিয়মিত এক্সারসাইজ এই সমস্যা দূর করতে পারে। তবে নাক ডাকা বাড়তে থাকলে, একেবারেই হেলাফেলা করা যাবে না। এই সমস্ত উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।