ট্যাঙড়ায় একই পরিবারের ছয় সদস্যর একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা

কলকাতা : ট্যাংরায় তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর পর বুধবার সকালে ইএম বাইপাসে একটি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি গাড়ি ধাক্কা মারে পিলারে। তাতে তিন যুবক আহত হন। হাসপাতালে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েই ট্যাংরার তিন মৃত্যুর সঙ্গে ঘটনার যোগ পায় পুলিশ।

অতুল শূর লেনের বাসিন্দা মৃতদের পরিবার। বুধবার সকালে প্রতিবেশীরা ওই বাড়ির কারও কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তাতেই তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপরই প্রকাশ্যে আসে হাড়হিম কাণ্ড। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধদমন) রুপেশ কুমার জানিয়েছেন, ছ’জন একই পরিবারের সদস্য। তাঁরা একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পায়েসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেয়েছিলেন তাঁরা। পরে হাতের শিরা কাটা অবস্থায় দুই মহিলা এবং এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়।

এর পর গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিন যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই তাঁরা গাড়ি নিয়ে অভিষিক্তা মোড়ের কাছে এক পিলারে ধাক্কা মারেন। আপাতত আহতদের বয়ান থেকে এ কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ।

দেহ মিলেছে দুই মহিলা এবং এক কিশোরীর। প্রথম দুজনের নাম রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে। আহত দুই ভাইয়ের নাম প্রণয় দে এবং প্রসূন দে। এই দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতরা পালানোর চেষ্টা করছিলেন।

রুপেশ কুমার বলেন, ‘‘একটি দুর্ঘটনা হয়েছিল। গাড়ি পিলারে ধাক্কা মারে। তিন জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের সূত্রে জানা যায়, একটি ঠিকানায় তিন জনের দেহ পড়ে আছে। সেই দেহগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সকলেই এক পরিবারের সদস্য। হাসপাতালে যাঁরা, তাঁরা তিন জনই পুরুষ।

আহতদের মধ্যে এক জন সচেতন আছেন। দু’জন অর্ধচেতন। তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিন জন। তার পর তাঁরা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পিলারে ধাক্কা মারেন। কী ঘটেছে, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।’’

বুধবার ট্যাংরায় যান রুপেশকুমার এবং লালবাজার হোমিসাইড শাখার আধিকারিকেরা। যায় ডগ স্কোয়াড। তিন জনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। কী কারণে এই আত্মহত্যা, তা নিয়ে রহস্য ক্রমে জটিল হচ্ছে।

প্রশ্ন উঠেছে, আত্মহত্যা করেছেন তিনজনই? নাকি দুজনকে খুনের পর একজন আত্মঘাতী হয়েছেন? কিন্তু কেন? নাকি নেপথ্যে অন্য কেউ? তদন্তকারীদের অনুমান, আত্মহত্যা নয়, সন্তান ও স্ত্রীদের খুন করেছে অভিযুক্তরা। তারপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে দুই ভাই পালানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পুলিশের জালে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ঘটনার পিছনে লুকিয়ে থাকা কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 4 =