উত্তরবঙ্গ প্রিয় পর্যটকদের জন্য সুখবর। এবার আর সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের গাড়ির ব্যবহার নিয়ে দুই রাজ্যে বিধি-নিষেধ থাকছে না। এক রাজ্যের গাড়ি অনায়াসে অন্য রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যেতে পারবে। পর্যটকদের পৌঁছে দিতে পারবে গন্তব্যে। সম্প্রতি এবিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হল রাজ্য সরকার ও সিকিম সরকারের মধ্যে। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সিকিমের পরিবহণ মন্ত্রী সঞ্জিত খারেল।
কাঞ্চনজঙ্ঘা, খরস্রোতা নদী, পাহাড়, জঙ্গল, রডোডেনড্রন নিয়ে প্রকৃতির সাজে সজ্জিত উত্তরবঙ্গ ও সিকিম। পর্যটকদের সংখ্যা এই জায়গাগুলোতে ক্রমশই বাড়ছে। কারও পছন্দ সিকিম, কারও আবার এ রাজ্যেরই দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার বিভিন্ন অফবিট ডেস্টিনেশন। যেহেতু সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ একেবারেই গায়ে গায়ে, তাই অনেকে দুই রাজ্য মিলিয়ে ট্যুর করেন। কিন্তু এতদিন পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র বিশেষত অফবিট জায়গায় হোম স্টে বা হোটেল পর্যন্ত সিকিমের সমস্ত গাড়ি যেমন সহজে যেতে পারত না, তেমনই সিকিমে ঢোকার ক্ষেত্রেও এ রাজ্যের গাড়ির জন্য বিধি নিষেধ ছিল। ফলে সিকিমে যাওয়ার জন্য সেখানকার গাড়ি বুক করতে হত, আর এ রাজ্যের জন্য এদিককার।এতে পর্যটকদের হেনস্তা হতে হত। কারণ তাঁদের সিকিম সীমান্তে নেমে আবার ওই রাজ্যের গাড়ি নিয়ে হোটেল পৌঁছতে হত। অবশেষে দুই রাজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল যে এখন থেকে কোনও রাজ্য গাড়ি আটকাবে না। চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ায় পর্যটকরা বাংলার গাড়ি নিয়ে যেমন সিকিমের হোটেল পর্যন্ত যেতে পারবেন, তেমন উল্টোটাও হবে। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এই চুক্তিতে পর্যটনে আরও জোয়ার আসবে।’ সিকিমের পরিবহণমন্ত্রী বলেন এই চুক্তি দুই রাজ্যের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।
পাশাপাশি দুই রাজ্যে বিভিন্ন রুটে গাড়ির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। শিলিগুড়ি-গ্যাংটক রুটে আগে সরকারি বাস ছিল ২৫টা তা বাড়িয়ে ৩০টি করা হয়েছে। আবার গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়ি ৪৫টি বাস চলত। তা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে।এছাড়া শিলিগুড়ি-নামচি রুটে আগে ৩টে বাস ছিল। তা বাড়িয়ে ৪টে করা হয়েছে। আবার গ্যাংটক থেকেও ৩টে বাস বাড়িয়ে ৫টা করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে কোচবিহারের সিতাই থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত বাস চালু হল। এই রুটে আমাদের রাজ্য চালাবে ২টো বাস ও সিকিম চালাবে ১টি বাস। এমনকী ট্যাক্সির সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। আগে ছিল ২ হাজার ৫০০ এখন করা হল ৩ হাজার। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দুই রাজ্য গাড়ি ঢোকার জন্য কোনও কর নেবে না। আর এই চুক্তিতে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে।’ অন্য দিকে সিকিমের পরিবহণমন্ত্রী সঞ্জিত খারেল বলেন, ‘বহুদিনের সমস্যা মিটে যাওয়ায় সুবিধা হল। এই উদ্যোগ নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ।’