নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ সংশোধনাগারে চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল বন্দির। মৃতের নাম অমন সিং। রবিবার এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সংশোধনাগারে ধানবাদ জেলার পুলিশ আধিকারিকরা পৌঁছন। এই খুনের পর সংশোধনাগারের ভেতরে আগ্নেয়াস্ত্র কী ভাবে পৌঁছল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অমন সিং একজন গ্যাংস্টার বলে পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে।
বছর ছয়েক আগে ধানবাদের তৎকালীন ডেপুটি মেয়র (সিং মেনসানের) সদস্য সঞ্জয় সিংহের হত্যার সঙ্গে এই অমন যুক্ত। বর্তমানে ধানবাদের জেলে ছিল এবং ধানবাদ জেল থেকেই সে সমস্ত রকমের অপরাধমূলক কাজকর্ম সঞ্চালনা করত বলেই অভিযোগ। আমান সিংহের সঙ্গে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁ এবং আসানসোলের ব্যবসায়ী অরবিন্দ ভগতের মৃত্যুর সংযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। অমনের নির্দেশে সুপারি নিয়ে হত্যাকাণ্ড চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকেই জেলের মধ্যে গুলি করে হত্যা করল অন্য দুষ্কৃতী। যদিও কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা পুলিশ এখনও তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখতে চাইছে।
অমন সিং হত্যা মামলায় একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে আশিস রঞ্জন ওরফে ছোটু সিং নামে এক ব্যক্তি বলেছে যে, তিনি অমন সিংকে খুন করেছে। যদিও এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি ‘একদিন’ পত্রিকা। অডিয়োর মাধ্যমে আশিস জানায়, ‘অনেকদিন ধরেই খুনের পরিকল্পনা চলছিল। এরপর অমনের সঙ্গেও কথা বলে একসঙ্গে কাজ করতে বলে। রাজি না হলে ছেলেকে ভিতরে পাঠিয়ে মেরে ফেলার কথা বলে। ধানবাদ কারও বাপের নয়। সে অমন সিংকে তার বড় ভাই মনে করেছিল, কিন্তু তাকেই হত্যা করার কথা ভাবছিল অমন। আমার বা আমার ছেলেদের মধ্যে কেউ যেন না আসে। তার দেওয়া পিস্তল দিয়ে তাকেই হত্যা করা হয়েছে। কয়লার মাঝে যে কেউ আসবে, তাকে মেরে ফেলা হবে। আমি ব্যবসায়ীদের চিন্তা করি না। আমার নাম আশিস রঞ্জন, আমি সবাইকে বলছি।’
অন্যদিকে ধানবাদ জেলে কুখ্যাত গ্যাংস্টার অমন সিংকে কে মেরেছে সে বিষয়ে আপাতত জেল প্রশাসন বা জেলা পুলিশ আধিকারিকরা কিছুই বলতে রাজি নন। কিন্তু খুনের সূঁচ যেন কয়লাঞ্চলের একটি শাসক পরিবারের দিকেই তাক করছে। ২০২২-এর ১৪ জুলাই আদালতে হাজিরার সময় মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময়, অমন সিং বলেছিলেন যে তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। তাকে হত্যা করে দেওয়া হবে বলে সে আশঙ্কা প্রকাশ করে, অমন সিং মিডিয়াকে বলেছিলেন যে, তিনি এবং তার পরিবারের শাসকদলের কাছাকাছি থাকা তার বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেদের দ্বারা জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। অমন বিচারকের কাছে তাকে উত্তরপ্রদেশের জেলে পাঠানোর অনুরোধও করেছিল বলে সে জানিয়েছিল।