৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেপাজতের নির্দেশ শান্তনুর

নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে শান্তনু গ্রেপ্তারের পর থেকে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে শান্তনুর বিষয়ে। আদালতে ইডি দাবি করেছে, শান্তনুর ৫টি বেআইনি সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি ইডির তরফে এও জানানো হয়েছে যে, জেরায় শান্তনু জানিয়েছেন, তিনি কখনও তাপসকে দেখেননি। এদিকে শান্তনুর যেসব জমি ও সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে, তাতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। পাশাপাশি ইডি-র তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে, ২০১৪ সালের টেটের দুর্নীতিতেও যুক্ত রয়েছে শান্তনু। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের টেটের অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গিয়েছিল শান্তনুর থেকে। এদিকে জেরায় শান্তনু সাফাই গেয়েছেন, কেন এই নথি তাঁর কাছে ছিল, তা মনে পড়ছে না শান্তনুর।
প্রসঙ্গত, এদিন হুগলির তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের একবার আদালতে পেশ করে ইডি। আদালতে এদিন ইডি দাবি করে, শান্তনুর অন্তত ১৩টি সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে তারা। বেনামে আরও পাঁচটি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। ইডি-র অভিযোগ, যেভাবে শিক্ষা দপ্তরে দুর্নীতির চক্রান্ত হয়েছিল, তাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘শিক্ষক’ এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ছাত্র’৷ বছরে যাঁর ৬ লক্ষ টাকা উপার্জন, সেই শান্তনুর কীভাবে কোটি কোটি টাকার টাকার সম্পত্তি হল, এ দিন আদালতে সে প্রশ্নও তোলা হয় ইডি-র তরফ থেকে।
শুক্রবার ইডি-র আইনজীবী ফের দাবি করেন, তারা তদন্তে বহু প্রভাবশালীর নাম পেয়েছেন। সেই সমস্ত নাম আদালতে না বলা হলেও কেস ডায়েরিতে রয়েছে। ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে ইডি-র আইনজীবী বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রতি বছর শীতের পর বসন্ত আসে, তারপরেই তীব্র গরম। গরমের পর আসে বর্ষা। তারপর তৈরি হয় রামধনু। বাংলা ও দেশের মানুষকে বলছি, একটু ধৈর্য ধরুন। আমরা রামধনুর কাছাকাছি, এই মুহূর্তে আমরা বসন্তে আছি৷’
উল্লেখ্য, সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, শান্তনুরে আইফোন থেকেও মিলেছে অ্যাডমিট কার্ড। একাধিক কোম্পানির হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যার মাধ্যমে মোটা টাকার ট্রানজাকশন হয়েছে। সেই কোম্পানির ডামি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানো হয়েছে বা সম্পত্তি কেনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্য ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো একাধিক প্রভাবশালীর সঙ্গেও শান্তনুর যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুগলিতে ৪১ ডেসিবেলের একটি ফার্ম হাউস মিলেছে বলে জানা যাচ্ছে এবং সূত্রের খবর, সেটি ইভান কনট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে রয়েছে। সূত্রের খবর, দুর্নীতির টাকা দিয়েই সেটি কেনা হয়েছে বলে সন্দেহ করছে তদন্তকারী সংস্থা।জানা যাচ্ছে, যে বেনামি সম্পত্তিগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কর্মী ও পরিচিতদের নামে কিনেছিলেন। সূত্রের খবর, স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে সম্পত্তি কিনেছিলেন শান্তনু। স্ত্রীর নাম সামনে রেখেই যাবতীয় কার্যকলাপ পরিচালনা করতেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিন আদালতে যাওয়ার পথে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আগামী দিনে সব সত্যি জানতে পারবেন। তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে, সব জানা যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + ten =