শামির প্রত্যাবর্তনে ধাক্কা, দলীপ ট্রফিতে সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ পূর্বাঞ্চল

ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন তাঁর কাছে এক নতুন শুরু হতে পারত। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটাই হল। দলীপ ট্রফিতে পূর্বাঞ্চলের হয়ে নামলেও ছন্দ খুঁজে পেলেন না মহম্মদ শামি। জাতীয় দলে ফেরার আশা নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন ভারতের এই তারকা পেসার। কিন্তু দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র একটি উইকেট তুলে নেওয়ায় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে তাঁর ফিটনেস ও পারফরম্যান্সে। তার সঙ্গে জুড়ে গেল নতুন করে চোটের আতঙ্ক। শেষ দিনে তিনি মাঠেই নামেননি। জানা যাচ্ছে, পায়ে চোট পেয়েছেন শামি। যদিও কতটা গুরুতর, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। সব মিলিয়ে জাতীয় দলে তাঁর ফেরার পথ যে কঠিন হয়ে উঠছে, তা নিয়ে সংশয় নেই।

শুধু শামি নন, ব্যর্থ হয়েছেন মুকেশ কুমারও। থাইয়ের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এক সময় জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বাদ পড়েছেন দু’জনই। এবার দলীপ ট্রফিতেও নিজেদের প্রমাণ করতে না পারায় নির্বাচকদের সামনে বড়সড় ধাক্কা খেলেন তাঁরা।

ম্যাচের গল্প শুরু হয় উত্তরাঞ্চলের ব্যাটিং দিয়ে। প্রথম ইনিংসে তারা তোলে ৪০৫ রান। আয়ুষ বাদোনি ও কানহাইয়া ওধায়ান করেন হাফসেঞ্চুরি। বল হাতে শামি পান কেবল সাহিল লোত্রার উইকেট। ২৩ ওভার বল করে ১০০ রান দিয়ে তাঁর বোলিং ছাপ ফেলতে পারেনি। মুকেশও উইকেটশূন্য। ফলে চাপ তৈরি হয় পূর্বাঞ্চলের উপর। ব্যাট হাতে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন রিয়ান পরাগ। কিন্তু অধিনায়কের ৩৯ রানে থেমে যায় তাঁদের লড়াই। প্রথম ইনিংসেই অলআউট হয় ২৩০ রানে। বল হাতে দুর্দান্ত সাফল্য পান আকিব নবি, যিনি তুলে নেন ৫ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে উত্তরাঞ্চলের ব্যাটাররা আরও শক্তিশালী ব্যাটিং প্রদর্শন করেন। ওপেনার অঙ্কিত কুমার ও যশ ধুল তুলে নেন সেঞ্চুরি। আর তরুণ প্রতিভা আয়ুষ বাদোনি করে বসেন ডবল সেঞ্চুরি। দল থামে ৪ উইকেটে ৬৫৮ রানে। সেই সময়েই শামি বল হাতেই নামেননি, যা আরও বড় প্রশ্ন তুলে দেয় তাঁর ফিটনেস নিয়ে।

অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলের বোলিং সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। শামি–মুকেশ জুটি থেকে যে সাফল্যের আশা ছিল, তা একেবারেই মেলেনি। ম্যাচ ড্র হলেও প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে উত্তরাঞ্চল জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণাঞ্চল।

দলীপ ট্রফির অন্য ম্যাচে একতরফা দাপট দেখায় মধ্যাঞ্চল। রজত পাতিদারের দুরন্ত সেঞ্চুরি ভরসায় তারা তোলে ৫৩২ রান। জবাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে মাত্র ১৮৫ রানে গুটিয়ে দেন কুলদীপ যাদব ও দীপক চাহাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট হাতে হাফসেঞ্চুরি করেন রজত। পাহাড়প্রমাণ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ২০০ রানের বেশি এগোতে পারেনি। ফলে ড্র হলেও প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সুবাদে সেমিফাইনালে ওঠে মধ্যাঞ্চল। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ পশ্চিমাঞ্চল।

সব মিলিয়ে, এই দলীপ ট্রফি শামি–মুকেশের মতো অভিজ্ঞদের জন্য হতাশা বয়ে এনেছে। জাতীয় দলে ফেরা যেখানে তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে ফর্ম ও ফিটনেস দুই দিকেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। বিশেষত শামির চোটের ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে, তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার এখন বড়সড় পরীক্ষার মুখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =