নীল জার্সিতে ফেরার লক্ষ্যে শামি, জোর কদমে শুরু করলেন প্রস্তুতি

ভারতীয় ক্রিকেটের ঘরোয়া মরশুম শুরু হতে চলেছে বৃহস্পতিবার থেকে দলীপ ট্রফি দিয়ে। এ বার টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে চলেছেন মহম্মদ শামি। দীর্ঘ দিন ধরে চোট আর ফর্মের সমস্যায় জাতীয় দলে সুযোগ পাননি তিনি। ইংল্যান্ড সফরে ছিলেন না, অস্ট্রেলিয়া সফরেও চোটের কারণে খেলতে পারেননি। এমনকি আসন্ন এশিয়া কাপের দলেও জায়গা হয়নি তাঁর। ফলে শামি বুঝে গিয়েছেন, জাতীয় দলে ফেরার একমাত্র রাস্তা হলো ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো। তাই দলীপ ট্রফিকেই নিজের বড় মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।

শামির প্রস্তুতিও নজর কাড়ার মতো। সাহসপুরে তাঁর নিজের ফার্মহাউসে তৈরি করেছেন আলাদা পিচ। সেখানে প্রতিদিন নেটে বোলিং করে নিজেকে ফিট এবং ধারালো রেখেছেন। এই ম্যাচগুলিই তাঁর কাছে আসল পরীক্ষা—এক অর্থে অ্যাসিড টেস্ট। কারণ, সামনে রয়েছে ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। অক্টোবর মাসে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। এরপর নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ রয়েছে। তার আগে আবার অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টি খেলবে রোহিত শর্মারা। এই দীর্ঘ সফরের আগে নির্বাচকরা কাকে কতটা ফিট এবং প্রস্তুত তা যাচাই করবেন দলীপ ট্রফিতেই। শামির লক্ষ্য স্পষ্ট—ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকেই জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করা।

প্রথম ম্যাচেই শামির দল পূর্বাঞ্চলের প্রতিপক্ষ উত্তরাঞ্চল। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে। শুরু থেকেই এই ম্যাচের দিকে নজর থাকবে, কারণ উত্তরাঞ্চলের হয়ে খেলতে কথা ছিল ভারতীয় দলের তরুণ তারকা শুভমান গিলের। তবে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি খেলতে পারবেন না। তাঁর অনুপস্থিতি নিঃসন্দেহে উত্তরাঞ্চলের জন্য বড় ধাক্কা। যদিও দলের শক্তি কমছে না, কারণ তাঁদের হয়ে মাঠে নামছেন অর্শদীপ সিং এবং হর্ষিত রানা। এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া এই দুই পেসার নির্বাচকদের বিশেষ নজরে থাকবেন। জানা গিয়েছে, তাঁরা কেবলমাত্র প্রথম ম্যাচেই খেলবেন।

সব মিলিয়ে দলীপ ট্রফি এবার শুধু একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নয়, বরং জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ের বড় মঞ্চ। বিশেষ করে শামির মতো অভিজ্ঞ পেসারের জন্য এটি এক প্রকার ‘ডু অর ডাই’। দেশের হয়ে বহু স্মরণীয় জয়ের অংশীদার হলেও বর্তমানে তিনি সাইডলাইনে। তাই নিজের চেনা ছন্দে ফেরার জন্য এই টুর্নামেন্টে তাঁকে সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে। নির্বাচকরা তাঁর ফিটনেস ও ধারাবাহিকতাকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন। অন্যদিকে তরুণদের মধ্যেও রয়েছে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ। তাই দলীপ ট্রফির সূচনালগ্ন থেকেই ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর থাকবে বেঙ্গালুরু ম্যাচে, যেখানে অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের লড়াই মিলেমিশে তৈরি করবে অন্য মাত্রা। এভাবে দলীপ ট্রফি ভারতের ঘরোয়া মরশুমের সূচনার পাশাপাশি জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ ছবিও স্পষ্ট করে দিতে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 16 =