শামি-অভিমন্যুর দাপটে সৈয়দ মুস্তাকে বাংলার টানা দুই জয় ! পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে বাংলা

মহম্মদ শামির দুরন্ত বোলিংয়ের সঙ্গে অভিমন্যু ঈশ্বরণের নেতৃত্ব—এই দুইয়ের মেলবন্ধনে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে আরও এক দাপুটে জয় তুলে নিল বাংলা। নকআউটে ওঠার লড়াইয়ে প্রতিটি ম্যাচই হয়ে উঠেছে ‘ডু অর ডাই’। সেই পরিস্থিতিতে সার্ভিসেসের বিরুদ্ধে জয় পেয়ে সি গ্রুপের শীর্ষে উঠে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করল বঙ্গ ব্রিগেড।

ম্যাচের শুরুটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না বাংলার জন্য। চার ম্যাচে মাত্র একটি জয় থাকা সত্ত্বেও সার্ভিসেস শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে চাপে ফেলে দেয় শামিদের। মাত্র ৯ ওভারে তারা পেরিয়ে যায় ১০০ রানের গণ্ডি। বাংলার বোলারদের মধ্যে তখনও মুকেশ কুমার ছন্দে ফিরতে পারেননি—অতিরিক্ত রান দিয়েছেন, লাইন-লেংথও বিচ্যুত হয়েছে বারবার। ফলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার দায় এসে পড়ে দুই পেসার—মহম্মদ শামি ও আকাশ দীপের উপর।

অভিজ্ঞ শামি সেই দায়িত্ব পুরোদস্তুর পালন করেন। দুরন্ত গতি, নিখুঁত লেংথ এবং ধারাবাহিক সুইং—সব মিলিয়ে সার্ভিসেস ব্যাটারদের একেবারে ব্যতিব্যস্ত করে দেন তিনি। একা হাতে চার উইকেট তুলে নিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান। শামির সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে আকাশ দীপও তুলে নেন তিন উইকেট। দু’জন মিলে প্রতিপক্ষের মধ্য ও নীচের সারির ব্যাটিং লাইন ভেঙে দেন মুহূর্তেই। ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় নেন ২ উইকেট এবং প্রদীপ্ত প্রামাণিক পান ১ উইকেট। প্রথমে দানবীয় গতিতে এগোলেও শেষদিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে থেমে যায় সার্ভিসেসের ইনিংস। নির্ধারিত ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৬ রান—টি-২০-র মানদণ্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, কিন্তু অপ্রতিরোধ্য নয়।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে বাংলার শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে যান আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা করণ লাল। কিন্তু এই ধাক্কা খুব দ্রুত সামলে নেন ওপেনার অভিষেক পোড়েল এবং অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ। দু’জনের ব্যাটেই দেখা যায় দারুণ আত্মবিশ্বাস ও নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন। উইকেট না হারিয়ে দু’জনে গড়ে তোলেন ম্যাচজয়ী জুটি। অভিমন্যুর ব্যাট থেকে আসে ৫৮ রান—জমাট অথচ ছন্দময় ইনিংস। অন্যদিকে অভিষেক পোড়েলের ৫৬ রানের ইনিংস দলকে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে দেয়। শেষদিকে যুবরাজ কেশওয়ানির ৩৬ ও আকাশ দীপের ১৪ রানের ছোট কিন্তু দ্রুত ইনিংস বাংলা’কে সহজ জয় এনে দেয়।

এই জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সি গ্রুপের শীর্ষে পৌঁছে যায় বাংলা। নেট রান রেটেও চোখে পড়ার মতো উন্নতি হয়েছে শামিদের। সামনে এখনও দুইটি ম্যাচ বাকি—দুটো জিততে পারলেই নিশ্চিত হবে নকআউটে ওঠা। যে ফর্মে রয়েছে দল, বিশেষ করে বোলিং আক্রমণ, তাতে উচ্চাশা আরও বেড়ে গেল।

ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন চার উইকেট নেওয়া মহম্মদ শামি—বাংলার জয়ের প্রকৃত কারিগর। সব মিলিয়ে, দাপটের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে বাংলার টি-২০ অভিযান, আর নকআউটের আশাকে আরও শক্তিশালী করল এই জয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 17 =