শক্তিগড় টেক্সটাইলের ম্যানেজার ও সহকর্মীকে খুনের হুমকির অভিযোগ বরখাস্ত কর্মীর বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদন, পূর্ব বর্ধমান: রাজ্যের পাটশিল্পের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান পূর্ব বর্ধমনের শক্তিগড় টেক্সটাইলের ম্যানেজার ও তাঁর সহ কর্মীকে খুনের হুমকির অভিযোগ উঠল বরখাস্ত হওয়া কর্মীর বিরুদ্ধে।
‘তোদের কেটে ফেলব, শুট করে দেব !’ ওষুধ কিনতে বেরিয়ে এমনই হুমকি শুনতে হয় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার ও তাঁর সহকর্মীকে। যাঁর বিরুদ্ধে এমন খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিনি সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়া ওই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজেরই এক কর্মী। পুজোর ছুটি শেষে ওই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি পুরোদমে চালু হওয়ার পর এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় শক্তিগড়ের শিল্পতালুক বড়শুল এলাকায়। খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া কর্মী জাকির হোসেন শেখের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় এফআইআর দায়ের করেন ইনডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার নির্মল কুমার গুহরায়। সেই এফ আই আরের ভিত্তিতে পুলিশ ৩৪১,৩২৩,৫০৪ এবং ৫০৬ আই পি সি ধারায় মামলা রুজু করে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ কে শক্তিগড় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার নির্মল গুহরায় জানিয়েছেন, “তাঁদের ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র স্টাফ (জেনারেল ম্যানেজার মেইনটেনেন্স বিভাগ ) হলেন সুশীল কারাটি । তাঁর সহকর্মী হলেন কমলেশ বেরা। ওষুধ কিনতে এঁনারা দু’জন গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টা নাগাদ বড়শুল সিডিপি স্কুলের কাছে ওষুধের দোকানের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁরা সিডিপি স্কুলের গেটের কাছে পৌঁছতেই তাঁদের পিছু নিয়ে মোটর বাইকে চেপে সেখানে পৌঁছন স্থানীয় তাঁতখণ্ড এলাকার বাসিন্দা ইন্ডাস্ট্রির সাসপেনডেড কর্মী জাকির হোসেন শেখ। নির্মল গুহরায়ের অভিযোগ, ‘ওই জায়গায় বাইক থামিয়েই জাকির হোসেন চড়াও হন তাঁদের ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র স্টাফ সুশীল কারাটি ও কমলেশ বেরার ওপর। জাকির অত্যন্ত খারাপ ভাষায় তাঁদের গালিগালাজ করা ছাড়াও শারীরিক ভাবেও নিগ্রহ করেন। এমনকি কেন সুশীল কারাটি শক্তিগড় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন না, তার কৈফিয়তও দাবি করেন৷ এ নিয়ে সুশীল কারাটি ও কমলেশ বেরা প্রতিবাদ করতেই জাকির হোসেন শেখ হুমকি দিয়ে তাঁদের বলেন, তোদের কেটে ফেলব, শুট করে দেব।’
জাকির হোসেন শেখের দাবি, ‘আমি শক্তিগড় টেক্সটাইলের বরখাস্ত হওয়া কর্মীও নই, আর কাউকে এমন হুমকিও দিইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’ নিজের দাবির সপক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে জাকির বলেন, ‘গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯ টা নাগাদ আমি বাইকে চেপে বড়শুলের সিডিপি হাইস্কুলের সামনের রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছিলা । ওই সময়ে রাস্তার অফ সাইড দিয়ে হাঁটছিলেন দু’জন ব্যক্তি। তার জন্য কোন দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারত। তাই আমি বাইক থামিয়ে রাস্তার অফ সাইড দিয়ে হাঁটা নিয়ে আপত্তি করি। তা নিয়েই ওই দু’জনের সঙ্গে আমার বাদানুবাদ বাধে। পরে তা মিটেও যায় । এর বাইরে আর কিছুই হয় নি।’ জাকির এও দাবি করেন, ‘যে দু’জনের সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদ হয়েছিল তারা যে শক্তিগড় টেক্সটাইলের পদাধিকারী সেটা তিনি জানতেন না। শক্তিগড় টেক্সটাইলের শ্রমিকদের স্বার্থে সবসময় তিনি সরব হন বলেই হয়তো বদলা নিতেই তাঁর বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা মামলা কর্তৃপক্ষ করেছে।’