এর্নাকুলাম, ২৯ অক্টোবর: রবিবারের সকালে কেরলের একটি ধর্মীয় সভায় বিস্ফোরণ। সূত্রের খবর, এক ঘণ্টার মধ্যে একাধিক বিস্ফোরণ হয়। তবে তার তীব্রতা কম ছিল। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। আহত অন্তত ২৩ জন। তাদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন, একটি টিফিন কৌটোর মধ্যে রাখা ছিল বিস্ফোরক। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে প্রথম বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কনভেনশন সেন্টারটি। কারও কারও মতে যদিও এই সময়টি ৯টা ৪০।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে কালামাসেরি এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণ হয়। কনভেনশন সেন্টারে একটি ধর্মীয় সভা চলাকালীন বিস্ফোরণ হয়। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে পরপর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয় বলেই প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। নাশকতার কারণেই বিস্ফোরণ বলে অনুমান পুলিশের। তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যায় এনআইএ এবং এনএসজি’র টিম। এদিকে শুরুতে কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও,কয়েক ঘণ্টা পরে ধর্মীয় জমায়েতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করে এক ব্যক্তি। ত্রিশূরের বাসিন্দা ৪৮ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির নাম ডোমিনিক মার্টিন। সে কোদাকারা থানায় গিয়ে ধারাবাহিক এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে।
কালামাসেরির পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল এমআর অজিত কুমার জানিয়েছেন, গ্রামীণ ত্রিশূরের কোদাকারা থানায় গিয়ে ডোমিনিক মার্টিন নামে ওই ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেছে। সে দাবি করেছে, সকালের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় তার হাত রয়েছে। সে জানিয়েছে, এদিন ওই কনভেনশন হলে যে ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রার্থনা চলছিল, সে নিজেও ওই একই গোষ্ঠীর সদস্য। তার এই দাবি সত্যি কিনা, তা যদিও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশ ওই ব্যক্তির বক্তব্যের সত্যতা খতিয়ে দেখছে।
সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি আদতে গুজরাতের বাসিন্দা। ম্যাঙ্গালোর থেকে সে কান্নুর হয়ে আরিকোড যাচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। তার সঙ্গে একটি ব্যাগ ছিল যেটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তার ভিতরে কী কী রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডমিমিককে হেপাজতে নেওয়া হয়েছে। সে মানসিকভাবে সুস্থ কিনা, তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের সময় প্রায় আড়াই হাজার মানুষ ওই কনভেনশন সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তৎপর রয়েছে পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। কেরলের এই বিস্ফোরণের ঘটনা যথেষ্ট উদ্বেগের। কেরল পুলিশের অনুমান, এটি একটি নাশকতামূলক বিস্ফোরণ। গোয়েন্দারা একে লো ইন্টেনসিটি সিরিয়াল ব্লাস্ট বলে অনুমান করছেন। এর আগেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই জাতীয় বিস্ফোরণ হয়েছে। সেই কায়দাতেই কেরলের এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে অনুমান। এই লো ইন্টেনসিটি অর্থাৎ বিস্ফোরণের মাত্রা সাংঘাতিক নয়। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় নির্দিষ্ট সময়ান্তরে একাধিক বিস্ফোরণ হতে থাকবে। এখনও পর্যন্ত বিস্ফোরণের কারণ স্পষ্ট হয়নি।