২০২৬ সালের শুরুতেই ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজন করতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ইতিমধ্যেই ক্রিকেটমহলে শুরু হয়েছে কোন কেন্দ্র কোন ম্যাচ পাবে, তা নিয়ে জোর আলোচনা। বিশ্বকাপের সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল লড়াই নিঃসন্দেহে ভারত বনাম পাকিস্তান। কিন্তু জানা গিয়েছে, সেই ম্যাচ ভারতের কোনও মাঠে অনুষ্ঠিত হবে না। দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই ক্রিকেটীয় মহাযুদ্ধ হবে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয়। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ম্যাচটি আয়োজন করা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপাতত প্রাথমিক খসড়া সূচি অনুযায়ী, বিশ্বকাপ শুরু হতে চলেছে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। টুর্নামেন্টের ফাইনাল নির্ধারিত হয়েছে ৮ মার্চ, এবং সেটি অনুষ্ঠিত হবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। দু’বছর আগের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালও এই ভেন্যুতেই হয়েছিল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আহমেদাবাদ আবারও অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠছে। তবে সূচির একটি বিশেষ শর্তও সামনে এসেছে—যদি পাকিস্তান ফাইনালে ওঠে, সেই ম্যাচ নাকি কলম্বোয় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। অর্থাৎ ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের মতোই ফাইনালও নিরাপত্তা ইস্যুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত।
ইডেন গার্ডেন্স নিয়েও তৈরি হয়েছে আলাদা কৌতূহল। দু’বছর আগে এখানে একটি সেমিফাইনাল হয়েছিল। এবারও ইডেনে একটি সেমিফাইনাল দেওয়া হবে, সেটা কার্যত নিশ্চিত। এমনকি ভারত সেমিফাইনালে উঠলে সেই ম্যাচও ইডেনে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বিশেষত, এবছর আইপিএলের কোয়ালিফায়ার ও ফাইনাল ইডেন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলে তার ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবেই বিশ্বকাপের বড় ম্যাচ ইডেনকে দেওয়া হবে বলে মনে করছেন ক্রিকেটমহল। রোহিত শর্মাদের দল যদি শেষ চারে পৌঁছায়, কলকাতা সমর্থকদের জন্য তা হবে বাড়তি আনন্দ।
বোর্ডের তরফে এখনও সরকারিভাবে সূচি ঘোষণা করা হয়নি। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভা রয়েছে। সেখানে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। যেহেতু ভারতই আয়োজক দেশ, তাই নতুন বোর্ড কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা করা হবে না। বোর্ড সূত্রে খবর, নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর সাত থেকে দশ দিনের মধ্যেই সরকারিভাবে সূচি প্রকাশ করা হবে।
ক্রিকেটমহলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিনক্ষণ নিয়েও চলছে জল্পনা। আইসিসি সাধারণত টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পর প্রথম রবিবারেই এই ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। যেহেতু এবারের বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে শনিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, তাই অনেকেই মনে করছেন ৮ ফেব্রুয়ারিই হতে পারে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দিন। তবে অন্য একটি মতও জোর পাচ্ছে। শেষবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ফলে উদ্বোধনী ম্যাচে ভারতকে খেলানো হতে পারে। যদি তাই হয়, তবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পিছিয়ে যেতে পারে ১৫ ফেব্রুয়ারি।
সবকিছুই এখন ঝুলে রয়েছে বোর্ডের এজিএমের উপর। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরেই চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ পাবে। ক্রিকেট মহলে আলোচনা চলছে, নতুন প্রেসিডেন্টের শহরেই একটি ‘মার্কি’ ম্যাচ দেওয়া হবে। ফলে আগামী অক্টোবরের শুরুতেই বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন সকলে।

