শালুক ফলের বীজ থেকে খই তৈরি করে লাভের আশায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা

শালুক ফলের বীজ থেকে সুস্বাদু খই তৈরি করে স্বনির্ভর হওয়ার পথ দেখাচ্ছেন হবিবপুর ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের মহিলারা। প্রতিবছর কার্তিক পুজোর মেলাতেই শালুক ফল থেকে উৎপাদিত এই খইয়ের চাহিদা থাকে অপ্রতুল। মালদার বিভিন্ন এলাকায় কার্তিক পুজোর মেলাতে একটানা ১৫ দিন ধরেই দেদার বিকোবে হবিবপুরের উন্নত মানের এই খই। যার ফলে এবছর মোটা টাকা উপার্জনের আশা করছেন হবিবপুর এলাকার খই উৎপাদনকারী মহিলারা।উল্লেখ্য, মালদা জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকের ঋষিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর গ্রামের কয়েকটি পরিবারের মহিলারা দীর্ঘদিন ধরেই এই খই তৈরি করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে খই ভেজে জমা করেন। সেগুলি মালদা শহরের ফুলবাড়ি কার্তিক পুজোর মেলায় প্রায় একমাস ধরে বিক্রি করেন। এছাড়াও মালদা জেলার যেসব এলাকায় শীতকালীন মেলার পার্বণ চলে সেখানেও বিক্রি হয় এই খই। এই মেলায় কয়েক কুইন্টাল ভ্যাটের খই বিক্রি হয়। শালুক ফলকে মালদার প্রচলিত ভাষায় ভ্যাটের ফল বলা হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বিল রয়েছে, সেগুলিতে শালুক গাছ দেখা যায়। অক্টোবর মাস থেকে শালুক ফল তোলা শুরু করেন এই হাবিবপুর ব্লকের খই প্রস্তুতকারক ওইসব পরিবারের মহিলারা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা সেগুলি নিয়ে আসেন। বাড়িতে সেই ফল পচানো হয়। ফল পচে গেলে ভেতরের বীচ বেরিয়ে আসে। জলে পচা ফল পরিষ্কার করে বীচ বার করা হয়। সেই বীচ ভালো করে রোদে শুকিয়ে তারপর বালি দিয়ে ভাজা হয় খই। সেই খই থেকে বালির কণা ও অন্যান্য নোংরা পরিষ্কার করা হয়। এই ভাবেই তৈরি হয় শালুক ফলের খই।
প্রতিবছর মালদা সহ আশেপাশের বাসিন্দারা এই খই কেনার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। গত বছর বাজারে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এই বছর আরোও ভালো দাম পাবেন আশায় রয়েছেন বিক্রেতারা।
খই প্রস্তুতকারকরা বলেন, শালুক ফলের পুষ্টিগুণ প্রচুর। এই বলে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, প্রোটিন এবং ফাইবার রয়েছে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম, নিয়াসিন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে। এই বীজে যেমন জীবাণু প্রতিরোধে বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাশাপাশি সম্ভব্য সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করতে পারে। যদিও গত বছর করোনার সংক্রমণের জেরে বেচাকেনা হয়েছিল কম। তবে এবছর এই খইয়ের চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যে পাইকারেরা খই কেনার জন্য বায়না দিতে শুরু করেছেন। তাই মনে করা হচ্ছে এবারে লাভের আশায় অনেকটাই থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =