শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু। কারও মাথা থেকে সরে গিয়েছে বাবা’র হাত। কেউ চোখের জলে নিখোঁজ সন্তানকে লাশের ভিড়ে খুঁজে চলেছেন। কেউ হারিয়েছেন স্নেহের ভাই বা দাদাকে। স্ত্রী, দুধের সন্তানকে রেখে ট্রেন দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন স্বামী। গত শুক্রবার থেকে এমন বহু ঘটনা আমাদের সামনে এসেছে। একটা ট্রেন দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছে কয়েকশো মানুষের জীবন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অসহায় বহু পরিবার। একদিকে প্রিয়জনকে হারানোর শোক, অন্যদিকে কীভাবে সংসার চলবে, সন্তানরা কীভাবে মানুষ হবে সেসব নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছে বহু পরিবার। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারগুলির পাশে এসে দাঁড়ালেন জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেওয়াগ। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের মতো এ যুগের নামী ক্রিকেটাররা শুধুমাত্র দুটো লাইনের সমবেদনা জানিয়ে কাজ সেরেছেন। এখানেই বাকিদের থেকে আলাদা বীরু। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারগুলির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। গত শুক্রবারের ওই বীভৎস ট্রেন দুর্ঘটনার ছবি নাড়া দিয়েছে গোটা দেশকে। দেশলাইয়ের বাক্সের মতো চারিদিকে ছড়িয়ে ট্রেনের কামরা। দলাপাকানো কামরা থেকে একে একে উদ্ধার হয়েছে ২৭৫ জনের মৃতদেহ। শয়ে শয়ে লাশের স্তুপ দেখে স্তম্ভিত প্রাক্তন ওপেনার বীরেন্দ্র সেওয়াগ। এই ছবি তাঁকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। তাই মৃতদের পরিবারগুলির উদ্দেশে নিজের মতো করে হাত বাড়িয়ে দিলেন বীরু। ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য মানবিক উদ্যোগ তাঁর। সেওয়াগ জানিয়েছেন, ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতদের সন্তানদের পড়াশোনার ভার তুলে নিতে চেয়েছেন বীরু। টুইট করে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। র্ঘটনা স্থলের একটি ছবি দিয়ে সেওয়াগ টুইটারে লিখেছেন, এই ছবিটি আমাদের দীর্ঘকাল ধরে তাড়া করবে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য আমি যেটুকু করতে পারি করব। সেওয়াগ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বোর্ডিংয়ে থেকে বিনামূল্যে পড়াশোনার প্রস্তাব দিলাম। প্রাক্তন ক্রিকেটারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রচুর মানুষ। একজন লিখেছেন, বাহ বীরু। তুমি সবচেয়ে দীর্ঘ ছক্কাটা আজ হাঁকিয়েছ।