দিল্লিতে ৪৫ বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গেল যমুনা নদীর জলস্তর। যমুনার জলস্তর বাড়তে থাকায় নিচু এলাকাগুলি ছাপিয়ে শহরের ভিতরে জল ঢুকতে শুরু করেছে। ফলে শঙ্কার প্রহর গুনছেন দিল্লিবাসী। আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হওয়ায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রবিবার সকাল ১১টায় যমুনার জলস্তর ছিল ২০৩.১৪ মিটার। সোমবার বিকেল ৫টায় সেই জলস্তর বেড়ে হয় ২০৫.৪ মিটার। তার ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেই জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে যায়।
অন্যদিকে হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টিতে কমপক্ষে ৭৯টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। আংশিক ভেঙে গিয়েছে ৩৩৩ বাড়ি। রাজ্যের ৪১টি জায়গায় ধস নেমেছে। মেঘভাঙা বৃষ্টিও নেমেছে এক জায়গায়। অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে হড়পা বান নেমেছে কমপক্ষে ২৯টি জায়গায়। বিপাশা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছোট-বড় নদীরই জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।
বুধবার নদীর জলস্তর বেড়ে হয় ২০৭.৫৫ মিটার। যা ১৯৭৮ সালের বন্যার সময় জলস্তরের রেকর্ডকে টপকে গিয়েছে। ওই সময় যমুনার জলস্তর বেড়ে হয়েছিল ২০৭.৪৯ মিটার। তবে এই জলস্তর আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করায় শহরের ভিতরেও জল ঢুকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মনাস্ট্রি মার্কেট, কাশ্মীরি গেট, রিং রোডে বাসিন্দাদের ঘরে জল ঢুকতে শুরু করেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর কাজ চলছে। রিং রোডে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের উদ্ধারের জন্য বড় বড় গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে।
দিল্লির আর এক মন্ত্রী আতিশি মারলেনা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘পরিস্থিতি সামলাতে দিল্লি সরকার প্রস্তুত। যমুনার জলস্তর কতটা বাড়ছে, প্রতি মুহূর্তে তা নজর রাখা হচ্ছে। জল যাতে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে প্লাবিত করতে না পারে, তার জন্য জায়গায় জায়গায় অস্থায়ী বাঁধ বানানো হচ্ছে।’
এদিকে বৃষ্টির পরিমাণ যত বাড়ছে, ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। চরম অবস্থা হিমাচল প্রদেশে। সে রাজ্যের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ভারী বৃষ্টির জেরে ধস ও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এখনও অবধি ৮০ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯২ জন। এখনই বৃষ্টি থামার কোনও ইঙ্গিত নেই। আগামী তিন-চারদিনও উত্তর ভারত জুড়ে ভারী বৃষ্টি জারি থাকবে বলেই জানানো হয়েছে মৌসম ভবনের তরফে। ভারী বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেতু। প্রায় ১০৫০ কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।