এ ভাবেই দুইয়ে দুইয়ে চার হয়। এ ভাবেই হঠাৎ করে মিলে যায় স্বপ্ন। যে স্বপ্নের পিছনে গত তিন মরসুম দৌড়চ্ছেন, কিছুতেই ছুঁতে পারছিলেন না, তা-ই এ বার মুঠোয় ধরলেন মুম্বইয়ের ছেলে। তাঁর শরীর নিয়ে যত চর্চা হয়েছে, রঞ্জি ক্রিকেটে তাঁর ঝুড়িঝুড়ি রান নিয়ে তত আলোচনা কেন যে হয়নি, অনেকেই প্রশ্ন করছিলেন। তবুও যেন শিঁকে কিছুতেই ছিঁড়ছিল না। এতদিনের আক্ষেপ, হতাশা এক দুপুরে মুছে গেল। অবশেষে টেস্ট টিমে ডাক পেলেন সরফরাজ খান।
টেস্ট টিমে সুযোগ না পেলেও পরিকল্পনাতেই যে ছিলেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বেসরকারি টেস্ট খেলেছেন। ইংল্যান্ডের এ টিমের বিরুদ্ধে ৩ ম্যাচের বেসরকারি টেস্টেও ছিলেন। সরফরাজ দ্বিতীয় ম্যাচে দুরন্ত ১৬১ রানের ইনিংস খেলেছেন। সিনিয়র টিমে যখন টপ অর্ডার রান দিতে পারছে না, সরফরাজ কেন সুযোগ পাবেন না, অনেকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন। লোকেশ রাহুলের মতো ক্রিকেটারের চোটে বাদ পড়ায় সরফরাজের জন্য জাতীয় টিমের দরজা খুলে গেল। সিনিয়র নয়, তরুণদেরই রাখা হচ্ছে ভাবনায়, এ কথা কয়েক দিন আগেই বলে দিয়েছেন রোহিত শর্মা। রঞ্জি ট্রফিতে ধারাবাহিক ভাবে রানের মধ্যে থাকলেও চেতেশ্বর পূজারাকে ভাবা হয়নি। যদি সব ঠিক থাকে, তা হলে বিশাখাপত্তনম টেস্টে তাঁর অভিষেক হতে চলেছে সরফরাজের।
১২ বছর বয়সে ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন সরফরাজ। হ্যারিস শিল্ডের একটা ম্য়াচে ৪৩৯ রান করে চমকে দিয়েছিলেন। সেই থেকে যখনই খেলতে নেমেছেন, নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেছেন। ২৬ বছরের ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল। গত মরসুমে রঞ্জিতে ব্যাট হাতে করেছিলেন ৯৮২ রান। ১২২এর বেশি গড়। তিনিই করেছিলেন সর্বোচ্চ রান। ভাবা হয়েছিল, এ বার হয়তো টেস্ট টিমের দরজা খুলে যাবে তাঁর জন্য। তাও তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়নি। কিন্তু হাল ছাড়েননি সরফরাজ। নিজের উপরেই রেখেছিলেন আস্থা। এই মরসুমেও তাই রানের মধ্যেই ছিলেন। এ বার ডাকও পেলেন ভারতীয় দলে। যশস্বী জয়সওয়াল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সফল। কিন্তু শুভমন গিল রান পাননি। চার নম্বরে নেমে রাহুল টিমকে ভরসা দিয়েছিলেন। তাঁর না থাকা নিশ্চিত ভাবেই বড় চাপ ভারতের কাছে। রাহুলের জায়গাতেই হয়তো টেস্ট অভিষেক হতে চলেছে সরফরাজের।