অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারি তত্ত্বে আটকে গেল সায়গলের জামিন

বুবুন মুখোপাধ্যায়

ফের আটকে গেল অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিন। আবারও ১৪ দিনের জেল হেপাজতে পাঠানো হল তাকে। ১ সেপ্টেম্বর সায়গলকে আবার হাজির করা হবে আসানসোল বিশেষ সিবিআই (CBI) আদালতে। অভিযুক্তের আইনজীবী সিবিআইয়ের তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আনেন। চার্জশিট দেওয়ার পরেও ৭০ দিন ধরে সায়গলকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। সিবিআই আইনজীবীকে বিচারক সরাসরি প্রশ্ন করেন গত ১৪ দিনে তদন্তের কি ডেভেলপমেন্ট হয়েছে? সিবিআই আইনজীবী জানান, ইতিমধ্যেই এই মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই তদন্তের আরও অগ্রগতি হবে। অনুব্রতর গ্রেপ্তারির এই যুক্তিতে সিবিআই আইনজীবী সায়গলের জামিনের বিরোধিতার করেন।
অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা প্রশ্ন তোলেন, এই মামলায় চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। তারপরেও কেন সায়গলকে ৭০ দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে?
জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বহু মামলার রেফারেন্স টেনে আনা হয় সওয়াল জবাবে। অভিযুক্তের আইনজীবী এদিন দাবি করেন কাটল স্মাগলিং তখনই বলা হয় যখন গোরু বর্ডার ক্রস করে। এখানে কাস্টমস-এ কোনও এফআইআর হয়নি। অথচ সায়গল হোসেনকে অ্যাসোসিয়েট কাটল স্মাগলার হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ কোনও আন্তর্জাতিক স্মাগলারকে গ্রেপ্তার না করে শুধুমাত্র বীরভূম জেলার কয়েকজনকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারা কোথায় কত টাকা পেয়েছেন সেই বিষয়টির ওপর ফোকাস করা হচ্ছে। যে উত্তরপ্রদেশে গোরুর হাট বসে সেখানে আজ পর্যন্ত সিবিআইয়ের বুকের পাটা হয়নি অভিযান চালানোর বা কাউকে গ্রেপ্তার করার। মহামান্য আদালতের নির্দেশে কাটল স্মাগলিং তদন্ত দিশা হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। সায়গল হোসেনের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইলগুলি ফরেন্সিকে পাঠানোর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয় সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। অভিযুক্তর আইনজীবী অভিযোগ করেন ওই মোবাইল এক্সপার্ট নিয়ে এসে ডিজিটাল লক বা হ্যাস ভ্যালু করা হয়নি। তা না করেই টেম্পার করার চেষ্টা হয়েছে। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মেনে নেন বিচারক। তবে এদিন সায়গল হোসেনের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ফরেন্সিকে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক আর অনুব্রত মণ্ডলের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল নিয়ে ১৯ তারিখ শুনানি হবে। তারপরেই ফরেন্সিকে দেওয়া হবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান বিচারক। সায়গলের স্ত্রীর বাজেয়াপ্ত গয়না ফেরতের আবেদন করা হয়। এই নিয়ে ১৯ তারিখ অর্থাৎ যেদিন অনুব্রতকে হাজির করা হবে আদালতে ওইদিন কল ফর সিডির নির্দেশ দেন বিচারক। তবে শেষ পর্যন্ত সায়গল হোসেনের জামিনের আবেদন শুধুমাত্র অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেপ্তারি তত্ত্বেই আটকে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 4 =