ফের ৭ দিনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের

শুক্রবার, ৭ দিনের সিবিআই হেপাজত হল অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। দু’পক্ষের প্রশ্ন উত্তর চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা আদালতে। শেষ পর্যন্ত বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সায়গল হোসেনকে ৭ দিনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেন। পরবর্তী আদালতে হাজির করার দিন ২৪ জুন। তবে সিবিআই সূত্রের খবর, সায়গল হোসেনের প্রায় ১০০ কোটির সম্পত্তি হদিস মিলেছে। সিবিআই সূত্রের খবর, বহু ডাম্পার, একাধিক ক্র্যাসার দেওচা-পাঁচামিতে রয়েছে সায়গেলের। ৫০টির মত জমির দলিল রয়েছে তার। যে জমির পরিমাণ প্রায় ২০০ বিঘা। এছাড়াও ৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে লেকটাউন, রাজারহাট, নিউটাউন, বোলপুরে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ দু’কোটি টাকা। মোট ১০০ কোটির সম্পত্তি থাকার সম্ভবনা করছে সিবিআই। যা সায়গেলের নিজস্ব এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিজনদের নামে রয়েছে। সিবিআই-এর দাবি এনামুল হকের হয়ে সায়গেল কাজ করত পুলিশ পার্সোনাল হিসেবে। যেমন বিএসএফ পার্সোনাল হিসেবে সতীশ কুমার গোরু পাচার সামাল দিত, তেমনই মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের পুলিশ পার্সোনাল হিসেবে কাজ করত সায়গল। এদিন সায়গল হোসেনের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে সরকারি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা অসাংবিধানিক। সিবিআই আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, সায়গলের নীরব থাকার বিষয়টি নিয়ে। সায়গলের আইনজীবীদের দাবি, নীরব থাকা বা চুপ থাকা মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। আবার পাল্টা প্রশ্নও এসেছে তদন্তের সহযোগিতাও আরেক অধিকার। এভাবেই চলে বাদানুবাদ। তবে ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তির যে দস্তাবেজ তালিকা, তা সিজার লিস্ট হিসেবে বিচারকের কাছে জমা করা হয়নি বলে দাবি সায়গেলের আইনজীবীর। উল্লেখ্য, সাত দিন সিবিআই হেপাজতে থাকার পর শুক্রবার আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করা হয় অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে। কলকাতা নিজাম প্যালেস থেকে সিবিআই আধিকারিকরা সকালে রওনা দেয়। আসানসোল সিবিআই আদালতে তাকে ঢোকানো হয় সকাল সাড়ে এগারোটায়। গোরু পাচার মামলায় ধৃত বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আসানসোল সিবিআই আদালতে প্রথম হাজির করা হয় ১০ জুন। ওইদিন বিকেলে এই মামলার দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শেষে সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তার জামিন নাকচ করে সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেন। ওইদিনের শুনানিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল এই মামলার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইও বা তদন্তকারী অফিসারকে শোকজ করা। আইন মেনে সিআরপিসির নির্দিষ্ট ধারায় নোটিস না পাঠিয়ে সায়গলকে গ্রেপ্তার করায় বিচারক মামলার আইওকে লিখিত ভাবে কারণ দর্শানোর জন্য শোকজ করেছিলেন। ১৭ জুন সেই শোকজের জবাব দিতে বিচারক নির্দেশ দেন। এদিন সেই শোকজের জবাব দেওয়া হয়েছে বিচারকের কাছে। জবাবে বিচারক সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, সায়গলের কাছে গোরু পাচার মামলার অনেক তথ্য রয়েছে। সিবিআই তাকে একাধিকবার নিজামের প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সায়গলের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও আয়বহির্ভূত বহু সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে সায়গেলের কাছ থেকে, সিবিআই সূত্রে তা জানা গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =