ফের ইউক্রেনে ভয়াবহ আঘাত হানল রাশিয়া। রুশ মিসাইল হামলায় প্রাণ হারালেন অন্তত ১৭ জন। আহত হয়েছেন বহু। গত দু’বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী লড়াই চলছে। অস্ত্রভাণ্ডারে টান পড়তে শুরু করেছে কিয়েভের। দুর্বল হয়ে পড়ছে বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যার ফলে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি মস্কোর এই হামলার। এমনটাই জানিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোডিমির জেলেনস্কি।
বোমাবর্ষণ, হানাহানি, রক্তপাত সব কিছুই অব্যাহত। দু’বছর পেরিয়ে গেলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের চিত্রটা খুব একটা পালটায়নি। গত কয়েকমাসে ইউক্রেনে হামলার সংখ্যা বাড়িয়েছে মস্কো। সূত্রে খবর, বুধবার বিকালে ইউক্রেনের অন্যতম জনবহুল শহর চেরনিহিভে আছড়ে পড়ে রাশিয়ার মিসাইল। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬১ জন। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে রাশিয়ার এই হামলায় নিজেদের দুর্বল বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই দুষেছেন জেলেনস্কি। ক্ষোভ উগরে তিনি বলেন, যদি আমাদের পর্যাপ্ত বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকত তাহলে এই হামলা ঠেকানো যেত। গোটা বিশ্বকে মানতে রুশ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজন রয়েছে। শহরের যে অংশে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছিল সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল রয়েছে। এই প্রসঙ্গ টেনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, যাঁরা মানুষের জীবন বাঁচান, যাঁরা সন্ত্রাস রুখতে পদক্ষেপ করেন তাঁদেরকেই আক্রমণ করে জঙ্গিরা।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসেই ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় ড্রোন হামলায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল বহুতল। প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে ৮ জন। মৃতদের মধ্যে ছিল ২ শিশুও। সেই প্রাণহানির জন্যও অস্ত্র সরবরাহের বিলম্ব হওয়াকেই দায়ী করেছিলেন জেলেনস্কি।
বলে রাখা ভালো, আগামী ১০ বছরের জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে পশ্চিমের ৭টি দেশ। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। মার্কিন অস্ত্রবলেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণ শুরু করেছে কিয়েভ। মস্কোর প্রতিটা আক্রমণের কড়া জবাব দিচ্ছে ইউক্রেনীয় ফৌজ। কিন্তু এবার ভাঁড়ারে টান পড়তে শুরু করেছে ওয়াশিংটনের। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ইউক্রেনকে বেহিসাব সামরিক সহায়তার ফলে আমেরিকার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে এই সহায়তা নিয়ে আমেরিকার অন্দরেই চরম অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। যেকারণে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্যাকেজ মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদনের জন্য আটকে রয়েছে।