নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমান: বৃহন্নলাদের ট্রেনের মধ্যে ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করার পদক্ষেপ করতে গিয়ে আক্রান্ত বর্ধমান আরপিএফ পোস্টের কর্মীরা। যার কারণে বিক্ষোভে নামেন বৃহন্নলারা। বিক্ষোভের জেরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বর্ধমান স্টেশন চত্বরে। দূরপাল্লা বা লোকাল ট্রেনের যাত্রাতে অনেক সাধারণ মানুষের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে বৃহন্নলাদের দাপাদাপি বলে অভিযোগ আরপিএফের। অন্যদিকে বৃহন্নলাদের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মোটা টাকা ঘুষ চেয়ে না পাওয়ায় আরপিএফ তাঁদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। দু’পক্ষের অভিযোগের মাঝেই মঙ্গলবার বর্ধমান রেল স্টেশনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান বৃহন্নলারা।
বিক্ষোভের মাঝেই বৃহন্নলাদের হাতে আক্রান্ত হন আরপিএফের এক মহিলা সাব ইন্সপেক্টর ও এক মহিলা কনস্টেবল সহ একজন সাব ইন্সপেক্টর ও দু’জন পুরুষ কনস্টেবল। এই ঘটনায় আরপিএফ পোস্ট সহ বর্ধমান স্টেশন চত্বরে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহন্নলাদের একটা বড় অংশ এদিন অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরপিএফ পোস্টের সামনে।
তাঁদের অভিযোগ, আরপিএফ আধিকারিকরা আইনি পদক্ষেপ করার ভয় দেখিয়ে মোটা টাকা ঘুষ চায়। তা না দিলেই তাদের ওপর নেমে আসে শারীরিক অত্যাচার। প্রায় দিনের নিত্যনতুন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বৃহন্নলারা। মঙ্গলবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে বলে দাবি। এমনকি এদিন বিক্ষোভ চলাকালীন আরপিএফের এক অফিসারকে রীতিমতো লাথি, চর, থাপ্পড় মারতে মারতে নিয়ে যান বৃহন্নলাদের একাংশ।
যদিও আরপিএফের ওপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বর্ধমান আরপিএফ পোস্টের আধিকারিকরা। তাঁদের দাবি, রেলের যাত্রীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা চাওয়ার অভিযোগ জমা পড়ছিল রেল বিভাগে, পূর্ব রেলের আধিকারিকদের নির্দেশেই বৃহন্নলাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে আরপিএফ।
পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজনেরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আমরা তো চেয়ে খাই। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতেও আমাদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা কিন্নর, বেকার, সমাজের মরা, আমরা চেয়ে খাই, কোথায় যাব আমরা!’
অভিযোগের সুরে তারা বলেন, ‘পাবলিক ভাই বেঁচে থাকুক সমাজ বেঁচে থাকুক। ইলেকশনের সময় আমাদের ধরে হ্যারাসমেন্ট করছে বিভিন্ন ভাবে আরপিএফ। আমাদের বেশ কয়েকজন কিন্নর ভোট দিতে যাচ্ছিল হাওড়ায়, তাঁদের ধরে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কেস দিচ্ছে। রাতে ধরলে মানসিক টর্চার করা হয়। ট্রেনের মান্থলিতে একবারের জায়গায় দু’বার-তিনবার করে টাকা চাওয়া হয়।’