তীব্র দাবদাহের কারণে আমের গোড়া পচা রোগ শুরু, লোকসানের আশঙ্কা

প্রায় এক মাস ধরে বৃষ্টি নেই মালদায়। পাশাপাশি চলছে তীব্র দাবদাহ। যার জেরে এখন মালদা জেলার বিভিন্ন ব্লকের আমবাগানগুলিতে ফলনে ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। তীব্র দাবদাহের কারণে আমের গোড়া পচা রোগ শুরু হয়েছে। এমনকী রোদের দাপটে শুকিয়ে ঝড়ে পড়ছে আম। যার কারণে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে আমের ফলন ঠেকাতে কি করবেন চাষিরা, তা ভেবে কুল করতে পারছেন না। অনেক আম চাষিরা বলছেন, এখন প্রয়োজন বৃষ্টির। তাহলে আমের ফলনকে দাবদাহের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
আম চাষিদের বক্তব্য, অনাবৃষ্টির জেরে আর্দ্রতা হারাচ্ছে চাষের মাটি। এর প্রভাব পড়েছে আমবাগানগুলিতেও। এবছর যে পরিমাণে আম এসেছিল। তাতে বিপুল পরিমাণ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু অনাবৃষ্টির জেরে গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে আম। আম চাষিরা আশা করেছিলেন এই মরসুমে লাভের বড়সড় অঙ্ক তারা দেখতে পাবেন। কিন্তু আশাহত হতে হচ্ছে তাঁদের।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে আমের চাষ হয়েছে। এবছর উৎপাদনের মাত্রাও অনেকটাই বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুরাতন মালদার ব্লকের কাদিরপুর এলাকার আম চাষি দিলীপ মণ্ডল বলেন, জলের অভাবে আমের বোটা শুকিয়ে যাচ্ছে। গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে অগণিত আম। চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চাষিদের কপালে। বাগান কিনে যারা আমের ব্যবসা করেন, তাদের গলাতেও আক্ষেপের সুর, বৃষ্টি হচ্ছে না। প্রতিদিনই আমবাগানে ঝড়ে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে আম।
একই সম্প্রতি দেখা দিয়েছে চাঁচল-১ ব্লকের আমবাগানগুলির। কলিগ্রাম, রামনগর এলাকার আমবাগান গুলিতে প্রতিদিনই ঝড়ে পড়ছে আম। জলসেচ করার ক্ষেত্রেও চরম সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। তেলের দাম অস্বাভাবিক হওয়ায় সেচ ক্ষেত্রে একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। তবুও ঋণ নিয়ে জলসেচ করতে হচ্ছে আম চাষিদের।
জল সেচ করার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুকুরের জল শুকিয়ে গিয়েছে।আর জলভর্তি পুকুর মাছ চাষ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুকুর মালিকরাও সেই জল দিতে নারাজ হচ্ছে। রামনগর অধিকাংশ আম চাষিদের বক্তব্য, পার্শ্ববর্তী পুকুরের মালিককে অনেক অনুরোধ করে রাজি করিয়ে জল দেওয়া হচ্ছে গাছের গোড়াগুলিতে। বৃষ্টি না হওয়ায় আমের আকার বাড়ছে না। শুকিয়ে গেছে গাছের গোড়া। বোটা থেকে ঝড়ে পড়ছে প্রচুর সংখ্যক আম। মনে হয় এবছর লাভের মুখ দেখতে পাব না। তবুও আম বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, বৃষ্টির প্রয়োজন আছে ঠিকই, কিন্তু অতিবৃষ্টি হলে আবার ফলনের ক্ষতি হতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত জেলায় আমের ফলন ভালোই রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 15 =