দুই দেশের সীমান্তে গোলাগুলি লেগেই রয়েছে। প্রায় শহিদ হচ্ছেন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী দেশের অগণিত জওয়ান। কান্নায় শেষ হয়ে যাচ্ছে কত পরিবার। তবুও সেই ১৯৪৭ সাল থেকে চলছে ভারত ও পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের মধ্যে চাপানউতোর। এমন প্রেক্ষাপটেও বেজায় খোশ মেজাজে আছেন দুই দেশের অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং বাবর আজম। ২৩ অক্টোবর মেলবোর্নের বাইশ গজে ‘মাদার অফ অল ব্যাটেল’। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে প্রায় ওয়েডিং ফটো ফটোশ্যুটে ব্যস্ত দুই মহাতারকা। এমন ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতে একেবারেই সময় নেয়নি।
কোথায় শত্রুতা! খোশমেজাজে দুই অধিনায়ককে দেখে মনে হচ্ছিল, প্রতিবেশি দুই দেশের মাঝে ভ্রাতৃত্বের বিজ্ঞাপন করছেন রোহিত-বাবর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ফটোশ্যুট ছিল অধিনায়কদের। সেখানে রোহিত এবং বাবরের ছবিতেই পরিষ্কার, বাইশ গজের বাইরে দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছে শুধুই বন্ধুত্ব। রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক জটিলতা এবং টানাপোড়েনকে গ্যালারিতে ফেলে দিলেন রোহিত-বাবর।
তাই তো সাংবাদিক সম্মেলনে পাশে বসা রোহিতের দিকে আঙুল দেখিয়ে বাবর বলে দিলেন, ‘রোহিত শর্মা একজন বড় ভাইয়ের মতো এবং আমি ওর কেরিয়ার এবং অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ রোহিত ভাই তাঁর দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাই ওঁর কাছ থেকে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করি।’
রোহিত আবার পাল্টা বলেছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্কের কথা। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের যখন একসঙ্গে দেখা হয়, যেমন-এশিয়া কাপে দেখা হয়েছিল, আমাদের মধ্যে পরিবার নিয়ে আলোচনা হয়, বাড়িতে কী চলছে, পরিবারের সকলে কেমন আছে। কে কী গাড়ি কিনবে। সেগুলো নিয়ে কথাবার্তা হয়। আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটাররাও এই শিক্ষা দিয়েছিলেন। সেতাই মেনে চলছি। আসলে সবসময় ক্রিকেট নিয়ে কথা বললে, অহেতুক নিজেদের উপর চাপ বেড়ে যায়। এমন চাপ নেওয়ার তো কোনও মানে হয়না।’
সেই ২০১২ সালের পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশ দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয় না। তবে আইসিসি ইভেন্টে মুখোমুখি হচ্ছে। এতকাল আইসিসি ইভেন্টে ভারতের জয়জয়কার দেখা গেলেও, ২০২১ সালে চিত্র বদলে যায়। ২০২১ সালের প্রথম বার কোনও বিশ্বকাপের ম্যাচে ভারতকে হারায় ১০ উইকেটে হারায় পাকিস্তান। এমনকি মাস খানেক আগে এশিয়া কাপে সুপার ফোর-এর লড়াইয়ে টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেটে জিতেছিল বাবরের দল। গত বারের মতোই ২০২২ বিশ্বকাপে ফের নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। এ বার কিন্তু বদলা নিতে মুখিয়ে রয়েছে ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড।