নীল জার্সিতে রোহিত শর্মা যুগ শেষ। যে জল্পনা এতদিন ধরে চলছিল, যে অঙ্ক মেলানোর চেষ্টা করছিলেন আইপিএল ভক্তরা, তাই সত্যি হল। আইপিএলের সবচেয়ে সফল টিমের ক্যাপ্টেন্সি তুলে দেওয়া হল হার্দিক পান্ডিয়ার কাঁধে। মেরিন ড্রাইভ থেকে চেম্বুর, একটা বিষয় নিয়েই দ্বিধাবিভক্ত। যিনি পাঁচটা খেতাব দিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে, তিনি এত তাড়াতাড়ি ব্রাত্য হয়ে গেলেন কেন? ভারতীয় বোর্ড যে আঙ্গিকে ভবিষ্যতের দিকে তাকাচ্ছে, সেই ছকই মুম্বইয়ের টিম ম্যানেজমেন্ট নিল? উত্তর হবে, হ্যাঁ! ৩৭-এর রোহিত খুব বেশি হলে আর দুটো কী তিনটে আইপিএল খেলবেন। ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হলে হার্দিকই সেরা বিকল্প হবেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একই সঙ্গে, আরও একটা প্রশ্নের উত্তর শুক্র-সন্ধেয় দিয়ে দিল নীতা আম্বানির টিম। যতই ঠান্ডা করা হোক, জসপ্রীত বুমরার প্রোমোশন হলে সহ অধিনায়কত্বের বেশি এগতে পারবেন না।
২০১৫ সালে যে টিম থেকে উত্থান হয়েছিল হার্দিকের, ট্রেডিংয়ে সেখানেই ফিরে এসেছিলেন যখন, মোটামুটি বোঝাই গিয়েছিল শুধু অলরাউন্ডার কিংবা ম্যাচ উইনার হয়ে মুম্বইয়ে ফিরছেন না। আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আবার নীল জার্সি বেছে নেননি। নেতা করা হবে এই আশ্বাসেই হার্দিক ফিরেছেন পুরনো টিমে। কেন হার্দিককে সেরা বাজি হিসেবে বাছল মুম্বই? সহজ উত্তর, আইপিএলে প্রথম বার পা রেখেই গুজরাট টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন, পরের বার রানার্স। আইপিএলে এমন ট্র্যাক রেকর্ড অনেকেরই নেই। তাঁর সঙ্গে ধারাবাহিক ক্যাপ্টেন হিসেবে একমাত্র লড়াই হতে পারে মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রোহিত শর্মার। সে কারণেই বিসিসিআই পর্যন্ত সাদা বলের ক্রিকেটে হার্দিককে মুখ করে সামনে এগোচ্ছে৷
সবচেয়ে বড় যে প্রশ্ন এই মুহূর্তে ক্রিকেটমহলে ভাসছে তা হল, ছ-মাস পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। রোহিত শর্মাকে কি ক্যাপ্টেন হিসেবে ভাবা হবে? নাকি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মতোই সামনে তাকাবে বোর্ড! মূলত আইপিএলের ধারা অনেক সময় অনুসরণ করে বিসিসিআই। অর্থাৎ আইপিএলে দুরন্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটার ভারতীয় দলে দ্রুত জায়গা করে নেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই ট্রেন্ড যদি বোর্ড ধার করে, তা হলে বলে দিতে হবে, রোহিতের কুড়ি-বিশের ‘ভারত সফর’ হয়তো শেষ। হার্দিকের মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যাপ্টেন হওয়া অনেক প্রশ্নের উত্তর একই সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছে।
এ ভাবেই একটা প্রজন্ম শেষ হয়। ঠিক যে ভাবে ধোনি পর্ব শেষ হয়ে বিরাট যুগের শুরু হয়েছিল। ঠিক সেই পথে হেঁটেই রোহিতের পর এ বার ‘হার্দিক শুভকামনা’ চাইছে ভারতীয় টিম।