সম্প্রতি টলিউড অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়েছে। আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গভীর রাতে মারা যান তিনি।
সম্প্রতি চিকিত্সকদেরও ভাবাচ্ছে বিষয়টা।একজন মানুষ ঘুমোতে গেলেন, কিন্তু আর উঠলেন না।হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। চিকিত্সার পরিভাষায় যাকে বলে ‘সাডন কার্ডিয়াক ডেথ’ বা ‘সাডন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ ।হৃদরোগে যত মানুষ মারা যান, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশের মৃত্যু হয় হঠাৎ, অনেক সময় ঘুমের মধ্যেই৷কীভাবে এড়াবেন এই বিপদ? আচমকা অ্যাটাক হলে কী করণীয়?
কীভাবে বুঝবেন পরিস্থিতি গুরুতর?
নিশ্বাসের কষ্ট, বুকে ভীষণ ব্যাথা, চাপ, ভারী হয়ে আসা, দরদর করে ঘাম হতে দেখলে রোগীর সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। অনেকে আচমকা অজ্ঞানও হয়ে যান।
এই ধরনের লক্ষণ শুরু হলে রোগীকে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ দিন। সময় নষ্ট না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাছের হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে নিয়ে যান। যদি মানুষটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, তবে প্রথমে তার পালস দেখে নিয়ে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন বা CPR করতে হবে। CPR এর প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে ভাল, না হলে বিশেষ পদ্ধতিতে বুকের উপর পাম্প করে মুখে ফু দিয়ে কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করতে হবে।
তবে কিছু ব্যবস্থা নিলে এই হঠাৎ মৃত্যু কিছুটা ঠেকানো যায়৷
শুয়ে থাকুন- চিকিত্সকের পরামর্শ বুকে ব্যথা হলে শুয়ে পড়লে কিছুটা কষ্ট কম হয়। সঙ্গে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার জটিলতার ঝুঁকি কিছুটা কম করতে পারে। সতর্ক হন- অধিকাংশ মানুষই ভাবতে পারেন না যে তাঁর হার্টের কোনও অসুখ হয়েছে। অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে করে অ্যান্টাসিড খেয়ে অপেক্ষা করেন। এতে কিন্তু জটিলতা বাড়ে।
অনেকে বলেন বুকে বাথ্যা ও নিঃশ্বাসের কষ্ট শুরু হলে জোর করে কেশে কফ বার করার চেষ্টা করলে অনেক বড় বিপদ থেকে বাঁচা যায়। কিন্তু মেডিক্যাল সায়েন্স এই ব্যাপারে এখনও বিশ বাঁও জলে।
আগে থেকেই সতর্ক হোন-কোনও সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কিন্তু হঠাত্ করে হার্ট অ্যাটাক হয় না। তার শরীরে নিশ্চই কোনও প্যারামিটারে গন্ডগোল থাকবেই। তাই পরিবারে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকলে একটা বয়সের পর চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারল ইত্যাদির মাত্রা ঠিক আছে কি পরীক্ষা করান। উচ্চ রক্তচাপ, ব্লাড সুগার, ওবেসিটি থাকলে সতর্ক হতে হবে।
নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন-প্রথমেই ধূমপান ত্যাগ করা দরকার। এটা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেবে। নিয়মিত হাঁটাহাটি, এক্সারসাইজ করাটা খুব জরুরি। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাওয়া অভ্যেস করুন।প্রয়োজনমতো চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।