ছেঁড়া জিন্স পরে কলেজে ঢোকা যাবে না, এমনই নিদান এজেসি বোস কলেজের। এই প্রসঙ্গে ১ বছর আগে এই নোটিস দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে শিক্ষামহলে। এবার আর নোটিস নয়, ভর্তির জন্যও দিতে হচ্ছে মুচলেখা। লিখে দিতে হচ্ছে, ‘ছেঁড়া জিন্স পরে আসব না।’ কারণ, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ১ বছর আগে নোটিস দিলেও এ বিষয়ে কোনও হেলদোলই দেখা যায়নি পড়ুয়াদের মধ্যে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ছেঁড়া জিন্স পরেই কলেজ আসতে থাকেন একাংশের পড়ুয়ারা। সে কারণেই এবার ভর্তির সময় মুচলেখার সিদ্ধান্ত।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, সিংহভাগ বেসরকারি কলেজে পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে ইউনিফর্ম। তবে সরকারি কলেজে এইসব কোনও ইউনিফর্মের বিষয় নেই। তাই সেখানে কে কী পরে আসবেন সেটা সম্পূর্ণ ছাত্রের নিজস্ব পছন্দের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। তবে এই রীতি ভাঙে এজেসি বোস কলেজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ ১ বছর আগে একটা নোটিস ঝুলিয়ে দেয় কলেজের গেটে। সেখানে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছিল, কলেজে আর কোনও ছেঁড়া জিন্স পরে আসা যাবে না। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সেই সময়। অনেক পড়ুয়াই প্রশ্ন করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে। সাফ বলেছিলেন কলেজ তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত পড়ুয়াদের জীবনশৈলীর উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।তবে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই কারণে এবার একেবারে মুচলেখা লিখিয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি করা হচ্ছে কলেজে।
এই ঘটনায় বিতর্ক দানা বাঁধলেও কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণ চন্দ্র মাইতি জানান, ৯৯ শতাংশ পড়ুয়া এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। কিন্তু ১ শতাংশ পড়ুয়া মেনে নিচ্ছিল না। সে কারণেই ওই ১ শতাংশকে নিয়ে ১০০ শতাংশে রূপান্তরিত করতেই এই মুচলেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।এই প্রসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘কলেজ হচ্ছে বিদ্যালয়। এখানে সরস্বতীর আরাধনা হয়। এখানে শুদ্ধ বস্ত্রে, শুদ্ধ চিত্তে আসাটাই ভাল। কলেজের ক্ষেত্রে যেটা শালীন সেটা নিশ্চয় কলেজের বাইরে হবে না। ঠিক যেমনভাবে ছেঁড়া জিনস পরে পুজোর অনুষ্ঠানে যাওয়া যায় না, তেমনই কলেজেও আসা যায় না। কলেজ তো আর ফ্যাশান শোয়ের জায়গা নয়। তাই বাইরে তুমি যা ইচ্ছা পরে যাও, কেউ কিছু বলবে না। কলেজে শুদ্ধ চিত্তে এসো।’