কেকেআর মিডল অর্ডারের শেষ ওভারে পাঁচটি ছক্কাতেই তৈরি হল নয়া ইতিহাস। প্রায় হাতছাড়া হয়ে যাওয়া ম্যাচ জিতিয়ে নাইটদের নায়ক হয়ে গেলেন রিঙ্কু। সঙ্গে এটাও বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন, তারকা ছাড়া ম্যাচ জেতা যায় না বা ২০০ রানের বোঝা মাথার ওপর থাকলে ম্যাচ জয় কঠিন এমন ধারনা ভুল। ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল, অ্যাওয়ে ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন টিমের সামনে চাপ দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার তত্ত্বও। উত্তেজনা বজায় রইল শেষ পর্যন্ত। গুজরাট টাইটান্স বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচটি পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। কখনও গুজরাটের দিকে তো পরক্ষণেই নাইটদের দিকে ঝুঁকে ম্যাচ। কী হয়, কী হয়। গুজরাট ২০০-র উপরে রান তুলেছিলেন। বুদ্ধিদীপ্ত ইনিংস ভেঙ্কটেশ আইয়ারের। তাঁর ব্যাটে জয়ের আশা টিকে ছিল কেকেআরের। ১৭তম ওভারে গুজরাট টাইটান্সের অধিনায়ক রশিদ খানের দুরন্ত হ্যাটট্রিক। কেকেআরের আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন ও শার্দূল ঠাকুর তিনজনই পরপর তিন বলে রশিদের শিকার। কেকেআরের হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছে, ধরেই নিয়েছিলেন আমেদাবাদের দর্শকরা। কিন্তু রিঙ্কু সিং হয়তো তখনও মনে মনে বলছিলেন, “পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত।” নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে সত্যিই তখনও অনেক কিছু দেখার বাকি ছিল। শেষ ওভারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শকদের স্তব্ধ করে দিলেন রিঙ্কু। প্রথম বলে সিঙ্গল নিয়েছিলেন উমেশ যাদব। এরপর শুরু রিঙ্কুর তাণ্ডব। পরের পাঁচটি বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জিতিয়ে দিলেন কেকেআরকে। গত ম্যাচে আরসিবির বিরুদ্ধে ভরসা দিয়েছিলেন রিঙ্কু। রবিবাসরীয় ম্যাচে গুজরাটের ডেরায় ঢুকে ম্যাচটাই জিতিয়ে দিলেন। ভেঙ্কটেশ, রিঙ্কুদের দাপটে ৩ উইকেটে জিতল কেকেআর। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় জয় নাইটদের। শেষ পাঁচ বলে জয়ের জন্য কেকেআরের প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। প্রথম বলে সিঙ্গল নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ যাদব। আইপিএলের ইতিহাসে শেষ ওভারে এত রান চেজ আগে দেখা যায়নি। যা এতদিন হয়নি তা হবে না এমনটাও নয়। গুজরাটের স্টপগ্যাপ ক্যাপ্টেন রশিদ খান শেষ ওভারে বল তুলে দিয়েছিল যশ দয়ালের হাতে।
প্রথম বল: শেষ ওভারে ২৯ রানের প্রয়োজন ছিল। স্ট্রাইকে উমেশ যাদব। যশ দয়ালের মন্থর বলে সিঙ্গল নেন তিনি।
দ্বিতীয় বল: অফ স্টাম্পের বাইরে যশ দয়ালের ফুলটস বল। একস্ট্রা কভারের উপর দিয়ে বলকে সীমানার বাইরে পাঠান রিঙ্কু।
তৃতীয় বল: ফের ফুলটস বল দয়ালের। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়্যার লেগের দিকে বল পাঠিয়ে দেন রিঙ্কু।
চতুর্থ বল: ফের ভুল যশ দয়ালের। চতুর্থ বলটিও ফুলটস। লং অফের উপর দিয়ে ফের ছক্কা রিঙ্কুর।
পঞ্চম বল: উত্তরপ্রদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটার যশের বলের গতি ছিল কম। কিন্তু রিঙ্কু তৈরি ছিলেন। বল আসতেই লং অনের উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন বাইরে।
ষষ্ঠ বল: জয়ের জন্য ১ বলে ৪ রানের প্রয়োজন ছিল কেকেআরের। যশ দয়ালের শর্ট বল ফের একবার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দেন রিঙ্কু।