আরজি কর হাসপাতালে ক্যানসারের ড্রাগ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হল। মঙ্গলবার অধ্যক্ষের নেতৃত্বে গঠিত হয় কমিটি। বিতর্কের সূত্রপাত হয়, কেন ১৫ মাস ধরে আরজি কর হাসপাতালে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্ষেত্রে সই করছিলেন না অধ্যক্ষ তা নিয়েই। এই প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ এদিন জানান, আদৌ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কোনও প্রয়োজন রয়েছে কিনা, তা জানতে একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং তা তাঁর নেতৃত্বেই হবে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যে ওষুধগুলির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে, সেগুলি অন্য কোম্পানির ওষুধ এবং তা সরকারি তালিকায় রয়েছে। তাই এই ওষুধগুলির ট্রায়াল আলাদা করে রোগীদের কোনও বাড়তি সুবিধা দেবে না বলেই মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে আবার এই ওষুধগুলিরই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কলকাতার আরও দুটি মেডক্যাল কলেজ এসএসকেএম, এনআরএসেও হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আরজি কর কেন ব্যতিক্রম তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ক্ষেত্রে আরজিকর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সেটা অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আরজিকর এই ভাবনা ভেবেছে। আর সেই পথেই এগোচ্ছে তারা।
এ প্রসঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় জানান, ‘মাল্টি ন্যাশনাল ওষুধের কোম্পানির ড্রাগটার ইতিমধ্যেই জোগান রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই সমস্ত ওষুধই বিনামূল্যে পাওয়া যায়। সুতরাং কোনটার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে আর কোনটার হবে না সেটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঠিক করবে। এই ব্যাপারে একটি কমিটি হবে। তারাই ঠিক করবে ড্রাগ ট্রায়াল হবে কিনা। আর এই দায়িত্ব দেওয়া আছে প্রিন্সিপ্যালের ওপরেই।‘
প্রসঙ্গত, এথিকস কমিটির অনুমোদনের পরও গত ১৫ মাস ধরে কেন আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সই করছেন না, সে প্রশ্নে তোলপাড় হয় স্বাস্থ্য প্রশাসন। কারণ, মূলত, ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য ২টি গবেষণা, হাড়ে ছড়িয়ে পড়ার ক্যান্সারে ১টি গবেষণা সংক্রান্ত ওষুধের এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এই গবেষণার হাত ধরে কয়েক লক্ষ টাকার ওষুধ কমে আসতে পারে কয়েক হাজার টাকায়। এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল নতুন পথ খুলে দিতে পারে ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে। অধ্যক্ষের সইয়ের জন্য আটকে তা বলেই অভিযোগ। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যক্ষ সই না করতেই পারেন। তবে সেটা তাঁকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এ নিয়ে অধ্যক্ষ কোনও মন্তব্য না করলেও এ ধরনের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের যে সমস্যা হতে পারে তা মানছেন বিশেষজ্ঞমহল।