অজিঙ্কাকে নেতৃত্বে ফেরানো, বোর্ড কি তবে পিছনে হাঁটছে

ক্যাপ্টেন্সি পেয়েছিলেন৷ কিন্তু পরের ম্যাচেই দল থেকে বাদ। বলা হয়েছিল, ‘হালকা চোট রয়েছে’। পরের সিরিজে রাহানে না থাকায়, সেটা যে বাদ দেওয়াই ছিল, পরিষ্কার হয়ে যায়। দেড় বছর পর টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করেছেন রাহানে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে চোটের কারণে লোকেশ রাহুল, শ্রেয়স আইয়াররা না থাকায়, রাহানেকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এক ম্যাচ খেলেই ফের সহ অধিনায়ক। অজিঙ্ক রাহানের বৃত্ত সম্পূর্ণ হল! ভারতীয় ক্রিকেট কোন পথে? এই প্রশ্নই উঠছে। তাঁর ক্যাপ্টেন্সি দক্ষতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ২০২০ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর। প্রথম টেস্ট খেলেই পিতৃত্বকালীন ছুটিতে দেশে ফেরার কথা ছিল তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলির। তিনি তাই করেন। পরিস্থিতি যদিও জটিল ছিল সে সময়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্টে ৩৬ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত। সেই সিরিজে ভারতীয় দল ঘুরে দাঁড়াতে পারে, এই প্রত্যাশাই কার্যত ছিল না। তাও আবার দলের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলিকে ছাড়া! অসাধ্যসাধন হয়েছিল রাহানের ক্যাপ্টেন্সিতে। মেলবোর্ন টেস্টে শতরান করে বাকিদেরও পথ দেখান ভারপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন অজিঙ্ক রাহানে। সিরিজে ভারতীয় দলে একের পর চোট। ০-১ পিছিয়ে থেকেও ভাঙাচোরা দল নিয়েই সিরিজ জিতেছিল ভারত। কৃতিত্ব অবশ্যই প্রাপ্য অজিঙ্ক রাহানের। প্রশ্ন অন্য জায়গায়। ভারতীয় ক্রিকেট ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে। টানা দু-বার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে হারের পর যে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে শুরু হচ্ছে ভারতের পরবর্তী বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সফর।  বাদ পড়েছেন পূজারা ও উমেশ যাতব। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মহম্মদ সামিকে। দলে জায়গা পেয়েছেন মুকেশ কুমার, যশস্বী জয়সওয়াল, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের মতো নতুনরা। বিরাট কোহলি টেস্ট ক্যাপ্টেন্সি ছাড়ার পরই ক্রাইসিস তৈরি হয়েছিল। রোহিত শর্মাকে সব ফরম্যাটেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। রোহিত যদি হঠাৎ টেস্টের দায়িত্ব ছাড়েন, তাহলে তাঁর জায়গায় কে? অজিঙ্ক রাহানে অতীতেও ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলেন। ক্যাপ্টেন্সিও করেছেন। টেস্ট স্কোয়াডে প্রত্যাবর্তনের আগে ঘরোয়া ক্রিকেটেও নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহানে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট যদি সামনেই এগোয়, তাহলে রোহিতের ডেপুটি হিসেবে তরুণদের মধ্যে কাউকে দেখে নেওয়া যেত না কি?  রাহানে সবে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেছেন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে দুই ইনিংসেই ভরসা দিয়েছেন ব্যাট হাতেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্যর্থ হলে তাঁকে কি সুযোগ দেওয়া হবে? তখন ভাইস ক্যাপ্টেন কে হবেন! তাঁকে বরং খোলা মনে ব্যাটিংটা করতে দিলেই ভালো হত। রোহিতের সঙ্গে নতুন কাউকে সহ-অধিনায়ক রাখলে এই সফর থেকেই ক্যাপ্টেন্সি বিকল্প তৈরি করা যেত। সীমিত ওভারের ফরম্যাটে যেটা করা হয়েছে। গত বছর অধিনায়ক ও সহ অধিনায়ক হিসেবে প্রায় সাতজনকে ট্রাই করা হয়েছিল। টি-টোয়েন্টিতে দক্ষতা প্রমাণ করেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। ওয়ান ডে-তে ভাইস ক্যাপ্টেন হার্দিক। সব কিছু ঠিক থাকলে, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হার্দিকের নেতৃত্বে খেলতে দেখা যাবে ভারতকে। টেস্টে রাহানেকে নেতৃত্বে ফেরানো মানে কি পিছনে হাঁটা নয়?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − six =