অশান্ত মণিপুর, ৮ জেলায় জারি ১৪৪ ধারা, বন্ধ ইন্টারনেট

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মণিপুরে। বুধবার উত্তর পূর্বের এই রাজ্যের চুরাচন্দপুর জেলায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মিছিল ঘিরেই বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা শুরু হয়। মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের তপসিলি জনজাতিভুক্ত করার দাবির বিরোধিতা করেই মিছিল করে অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর (ATSUM)। এই মিছিল থেকেই আদিবাসী ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে শুরু হয় অশান্তি। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে গুলিও চালায় পুলিশ। ছোড়ে কাঁদানে গ্যাসও। কার্যত মণিপুরের বিক্ষিপ্ত জায়গা জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কথা বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

রাজ্যে পরিস্থিতি শান্ত করতে কেন্দ্রের তরফে ব়্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (RAF) মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সেনা,আধা সেনা ও অসম রাইফেলস-র বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে অশান্তি রুখতে মণিপুরের ৮ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আগামী পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সেনা ও আধা সেনাদের আশ্রয় শিবিরে গ্রামবাসীদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

মণিপুরের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের বনাঞ্চল এবং জলাভূমির উপর জনজাতি মানুষদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগে আন্দোলন চলছিলই। রাজ্য প্রশাসনের অনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সংহতি মিছিলের ডাক দিয়েছিল রাজ্যের জনজাতি ছাত্র ইউনিয়ন (এটিএসইউএম)। সম্প্রতি সে রাজ্যের মেইতেই সম্প্রদায় তাদের তপসিলি উপজাতিভুক্ত করার দাবি তুলেছে। কিন্তু রাজ্যের তপসিলি সম্প্রদায়গুলি একযোগে তার বিরোধিতা করছে। সম্প্রতি মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের এই দাবিটি বিবেচনা করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। তার পরই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এই ধরনের ঘটনা দেখা গিয়েছে। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে রাজ্যের সরকারকে সাহায্যের জন্য জনগণের কাছে অনুরোধ করেছেন। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় ফ্ল্য়াগ মার্চ করছে। আর গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে কেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + 3 =