যুগান্তকারী রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আর্থিকভাবে অনগ্রসর শ্রেণিকেও সংরক্ষণের (EWS Reservation) আওতায় আনার পক্ষে রায় দিল শীর্ষ আদালত। পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা জনতার জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা যাবে। এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক তকমা দেওয়া যায় না। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পরে সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষ।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উমেশ ললিতের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরী, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট, বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, প্রধান বিচারপতি ললিত এবং বিচারপতি ভট্ট এই রায়ের বিরুদ্ধমত পোষণ করেন। যদিও রায়দানের সময় বিচারপতি মহেশ্বরীর পর্যবেক্ষণ, অর্থনৈতিক মানদণ্ডের নিরিখে ইডব্লিউএস সংরক্ষণ আইন কোনও ভাবেই সংবিধানের মূল কাঠামো অথবা সাম্যের নীতিকে লঙ্ঘন করে না। তবে প্রধান বিচারপতি ললিত এবং বিচারপতি ভট্টের মতে, এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা থেকে তপসিলি জাতি, তপসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির দরিদ্রদের বাদ দেওয়া অসাংবিধানিক।
সংবিধান সংশোধনের পরেই প্রশ্ন উঠেছিল, সংবিধানে তো অনগ্রসর বলতে কেবলমাত্র শিক্ষাগত ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়াদের কথা বলা হয়েছে। আর্থিক অবস্থা নিয়ে সংবিধানে কিছু বলা হয়নি। তাহলে এই সংরক্ষণ অসাংবিধানিক। সেই সঙ্গে জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য নির্ধারিত আসন কমিয়ে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র, এমনও দাবি করা হয়েছিল। তবে কেন্দ্র জানিয়েছিল, জেনারেল ক্যাটেগরির জন্য বরাদ্দ ৫০ শতাংশ আসনের কোনও কাটছাঁট হবে না। আলাদা করেই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জন্য।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সাংবিধানিক বেঞ্চে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল। এই মামলা নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে শুনানির পর রায় সংরক্ষিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত। সোমবার রায়দানের সময় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি রবীন্দ্র ভট্ট ছাড়া বাকিরা এই সংরক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষেই রায় দিয়েছেন। রায়দানের সময় বিচারপতি মহেশ্বরীর সঙ্গে সহমত বিচারপতি ত্রিবেদী। যদিও তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যমূলক হওয়ার কারণ দেখিয়ে সংবিধানের ১০৩তম সংশোধনীকে বাদ দেওয়া যায় না। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের শেষে আমরা (দেশের) সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে পুনর্বিবেচনা করব।’