সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের রহস্য মৃত্যুর তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট মুখ বন্ধ খামে আদালতে জমা দিল সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট, এমনটাই খবর আদালত সূত্রে। এদিকে এরই পাশাপাশি তদন্ত আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এক মাস সময় চাওয়াও হয়েছে সিটের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ডিআইজি সিআইডি-কে লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের নির্দেশে দেন। কিন্তু সেই তদন্তে অনেক ত্রুটির কারণে পরবর্তীতে সিট গঠন করে হাইকোর্ট। আগামী ১ ডিসেম্বর তদন্তের অগ্রগতির পরবর্তী রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। এই সময়ের মধ্যে সিবিআই অফিসারদের তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানায় সিআইডি। তার প্রেক্ষিতে আদালতের বক্তব্য, সিবিআই সহযোগিতা করছে না রিপোর্টে এমন কিছু অভিযোগ নেই।
বগটুইকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখকে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর আদালতে তোলা হলে তাকে ৬ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীনই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় লালনের। গত ১২ ডিসেম্বর রামপুরহাটের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পে লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তারপরেই লালন শেখের পরিবারের তরফে তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ‘খুনের’ অভিযোগ তোলা হয়। লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি সেই সময় দাবি করেন, সিবিআই তাঁর স্বামীকে খুন করেছে। সেই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্য রাজনীতিতে।
এরপরই লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি ৭ সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে আইনি পদক্ষেপ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এবং আদালতের নির্দেশ অনুসারে এই মামলায় তদন্তের ভার যায় সিআইডি-র হাতে। তারপর থেকে মামলার তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি। লালনের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘সিবিআই আধিকারিকরা সব সেটল করে দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। এমনকী বাড়ি থেকে হার্ড ডিস্কও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ওদের বলি যে আমার বাড়িতে চুরি হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হলেও, আমি বলি আমার পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব নয়। তারপরেই আমাকে হুমকি দিতে থাকেন সিবিআই অফিসাররা।’
যদিও লালন শেখের স্ত্রীয়ের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে সিবিআই। লালনের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলায় ফাঁস লেগেই মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। পাশাপাশি লালনের দেহে কয়েকটি ‘সুপারফিসিয়াল মার্ক’-এর উল্লেখ ছিল। অন্যদিকে এই ঘটনায় সক্রিয় হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। কমিশনের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেন।