হাওড়া: সাম্প্রতিককালে সোশ্যাল মিডিয়াতে চাঁদের বুকে গর্ত বলে একটি মিম ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ছবিকে একলহমাতে দেখলে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি বলেই মনে হলেও ভালো করে দেখলে সেটা কোনো একটি রাস্তার ছবি ও তার উপরে হওয়া গর্তগুলো স্পষ্ট বোঝা যায়। সেই ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে এখন বেশ মিল পাওয়া যাচ্ছে হাওড়া পুরনিগমের অধীনে থাকা একাধিক রাস্তা। রাস্তা যেন নয় গর্ত বাঁচিয়ে তৈরি হয়েছে যেন রাস্তা। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রতি বছর দুর্গাপূজা এলেই পুরনিগম থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলে। যা বছর ঘুরতেই ফের আগের অবস্থাতে ফিরে আসে।
সেই রাস্তা দিয়ে মোটরবাইক, সাইকেল, টোটো ও গাড়ি চালানো নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যাওয়ার সামিল। অনেকসময় গর্তে চাকা পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে যদিও তাতেও বদলায় না রাস্তার চালচিত্র। এহেন পরিস্থিতিতে রাস্তা সারাইয়ের নামে নিম্ন মানের উপাদান ব্যবহার থেকে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে হাওড়ার বিরোধী দল বিজেপি। যদিও হাওড়া পুর নিগমের মুখ্য প্রশাসক সেই অভিযোগ মানতে নারাজ নিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘ বিরোধীরা যদি দেখতে না পান তাহলে তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার মতো চোখের চিকিৎসক আমি নই। বরঞ্চ একটা কথা আছে যে যেমন সে দুনিয়াটা সেভাবেই দেখতে পায়। এতে আমাদের কিছু করার নেই।’ সুজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘দুর্গাপূজার আগে আমরা দুই পর্যায়ে রাস্তা সরানোর কাজ শুরু করছি। প্রথম পর্যায়ের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ন হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি রাস্তায় কাজও শুরু হয়ে গেছে। প্রথম পর্যায়ে ৪ কোটি টাকা খরচ হবে ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩ কোটি টাকা খরচ হবে। মোট ১২ কিলোমিটার রাস্তা সারাইয়ের কাজ শেষ করা হবে দুই পর্যায়ে। এরমধ্যে শহরের একাধিক রাস্তা সহ নগর নিগমের সংযোজিত এলাকাগুলোয় রাস্তা সারাইয়ের কাজ হবে।’ যদিও পৌর নিগমের এই প্রতি বছর রাস্তা সারাইকে কটাক্ষ করে বিজেপি রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই অভিযোগ করেন, ‘ হাওড়া পুরনিগম কাটমানি ও কমিশনের ভাগাভাগির উপরে চলে, কে কত টাকা ভাগ পাবে তার উপরে রাস্তা সারাইয়ের কাজ হয়। না হলে একই রাস্তা প্রতি বছর সরানো যায় নাকি! যে সংস্থা রাস্তা সারাচ্ছে টাকা নিয়ে তারা রাস্তা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব নেয় এভাবেই সারা দেশে কাজ হয়। আর এখানে একই রাস্তার উপর প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। পুরনিগমের রাস্তা সারাইয়ের তালিকার বাইরেও একাধিক রাস্তা বেহাল দশাতে আছে। শুধু ১২ কিলোমিটার রাস্তায় সাময়িক সরানোর খরচ ৭ কোটি টাকা। এরা লুটের রাজত্ব চালাচ্ছে। তাই পুজোর আগে তড়িঘড়ি টেন্ডার ডেকে রাস্তা সরানোর কাজ করছে হাওড়া পুরনিগম।’