শুক্রবার সকালে ফাঁসি দেওয়ায় উদ্ধার হল রেনুকা খাতুনের মাথা ও দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, বস্তাবন্দি করে রেণুকার দেহ ক্যানেলে পেলেছিল এম ডি আনসারুল। পাশাপাশি পুলিশ এও জানিয়েছে, স্ত্রীকে খুন করার পর ১২ দিন ধরে একেবারে ঠান্ডা স্বভাবে সমস্ত কাজ করেছে রেণুকার স্বামী। কাউকে বুঝতে পর্যন্ত দেয়নি যে কী কাণ্ড সে বাঁধিয়েছে।এমনকী, শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও খাবারও খেয়েছিল আনসারুল। এদিকে আনসারুলকে পুলিশে জিজ্ঞাসাবাদের পর সামনে এসেছে আরও নয়া তথ্য। রেণুকে হত্যা করার আগে গেটবাজারের কাছে এক দোকানে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীকে বিরিয়ানি খাইয়েছিল সে। সেখান থেকে নিয়ে যায় গোয়ালটুলি মোড় এলাকায়। এরপর আগে থেকে লুকিয়ে রাখা ছুরি দিয়েই স্ত্রীকে খুন করে দেহ দুই টুকরো করে ক্যানেলের জলে ফেলে দেয়।
একইসঙ্গে পুলিশ এও জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে, আগে থেকে কিছু পোশাক রেখে দিয়েছিল আনসারুল। খুনের পর পোশাক বদলে নেয় সে। এরপরই পরিবারকে জানায় স্ত্রী নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। রেনুকার মোবাইলটিও ফেলে দেয় আনসারুল। অর্থাৎ, গত কয়েকদিন ধরেই স্ত্রীকে খুনের পরিকল্পনা করছিল সে, মনে করছেন তদন্তকারীরা।কারণ পুলিশ সূত্রে এও জানা যাচ্ছে, খুনের একদিন আগে ফাঁসি দেওয়ারগোয়ালটুলি মোড়ের কাছে সুদামগছে গিয়েছিল আনসারুল।সেখানে গিয়ে বস্তা, ছুরি রেখে আসে। এরপর ২৪ ডিসেম্বর স্ত্রীকে নিয়ে সে সেখানে যায়।এদিকে শুক্রবার তাকে আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে এও খবর মিলেছে যে, শুক্রবার রেনুকার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
এদিকে রেণুকার পরিবারের সদস্যদের অভিয়োগ, স্ত্রীকে পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ করলেও রেনুকার পরিবারের দাবি মাটিগাড়া এলাকার এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এমডি আনসারুলের।তা জেনে গিয়েছিলেন রেনুকা।আর সেই জন্যই তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে আনসারুল।এই অভিযোগ পাওয়ার পরপুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। মৃত রেনুকার আত্মীয় মিন্নাতুল্লা জানান, , পেশায় রঙ মিস্ত্রি এই আনসারুল। ফাঁসিদেওয়ার চটহাটের কাছে এক আত্মীয়ের বাড়ি।আর সেই সূত্রেই রেণুকার সঙ্গে তার আলাপ। ৬ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল রেনুকা ও আনসারুলের। রেনুকাকে প্রথম দেখাতেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল আনসারুলের। এরপর প্রায় ছয় মাস ধরে রেনুকার পরিবারকে চাপ দেয় সে বিয়ের দেওয়ার জন্য।