হার-জিত নয়, চেন্নাই সুপার কিংসের লক্ষ্য প্লে-অফে জায়গা করে নেওয়া। ম্যাচ জেতার জন্য চেন্নাই সুপার কিংসের টার্গেট ছিল ২১৯। কিন্তু হারলেও প্লে-অফে জায়গা করে নিতে পারার অঙ্ক ছিল তাদের সামনে। ২০১ রান করলেই হত। স্বাভাবিক ভাবেই চাপ বেশি ছিল আরসিবি শিবিরেই। তাদের প্রথম কথা জিততেই হত, দ্বিতীয়ত নেট রান রেট। বল হাতে শুরুটাও দুর্দান্ত হয় আরসিবির। বোলিং ওপেন করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। প্রথম বলেই ফেরান সিএসকে ক্যাপ্টেন ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট নিতে থাকে আরসিবি। তবে বিশ্বের সেরা ফিনিশার যে টিমে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ না হওয়া অবধি শেষ বলে কিছু নেই। ধোনি ক্রিজে থাকা অবধি প্লে-অফের দৌড়ে টিকে ছিল চেন্নাই। শেষ অবধি ২৭ রানের নাটকীয় জয় আরসিবির। নেট রান রেটের অঙ্কেও জয়। প্লে-অফে আরসিবি।
পাওয়ার প্লে-তে ২ উইকেটে ৫৮। শিবম দুবে তখন ১১ বলে মাত্র ৪ রানে ব্যাট করছিলেন। সেটি চেন্নাই ইনিংসের ১৩তম ওভার। ম্যাক্সওয়েলের স্পেলের শেষ ওভার। শেষ বলে রাচিন রবীন্দ্রকে রান আউট করে ফের আরসিবিকে ম্যাচে ফেরায় মহীপালের থ্রো এবং কার্তিকের উইকেট ভাঙা। হাফসেঞ্চুরি করা রাচিন আউট। ৩৭ বলে ৬১ রানের অনবদ্য ইনিংস। পরের ওভারে ক্যামেরন গ্রিন আক্রমণে। শিবম দুবে মরসুমের শুরু থেকে বিধ্বংসী ফর্মে। চাপের ম্যাচে ১৫ বলে ৭ রানে ফিরলেন। গ্রিনের শর্ট পিচ ডেলিভারি, লং অন বাউন্ডারিতে ক্যাচ লকি ফার্গুসনের।
মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রবেশ ১৬তম ওভারে। তার আগের ওভারের শেষ বলে অবিশ্বাস্য ক্যাচে মিচেল স্যান্টনারকে ফেরান ফাফ ডুপ্লেসি। মহম্মদ সিরাজের লো ফুলটস, কভারে স্পট জাম্পে অনবদ্য ক্যাচ। কোয়ালিফাই করতে ৩০ বলে ৭১ প্রয়োজন ছিল সিএসকের। ম্যাচ জেতার চেয়েও এই টার্গেটই ঘুরছিল। শেষ চার ওভারে সিএসকের কোয়ালিফায়িং লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬৩ রান। আরসিবির টার্গেট ৬২-এর আগেই থামিয়ে দেওয়া।
চেন্নাই ইনিংসের ১৬তম ওভারে আক্রমণে আসেন যশ দয়াল। এখান থেকেই আরসিবির মূল পরীক্ষা শুরু হয়। ক্রিজে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাডেজা। যশের ওভারে আসে ১৩ রান। তিন ওভারে ৫০ প্রয়োজন সিএসকের। ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই ছয় মেরে সিরাজকে স্বাগত জানান রবীন্দ্র জাডেজা। ফের পরিস্থিতি ঘুরতে থাকে চেন্নাইয়ের দিকে। সিরাজের এই ওভারে আসে ১৫ রান। ১২ বলে ৩৫ টার্গেট দাঁড়ায় সিএসকের।
লকি ফার্গুসন হাই ফুলটসে ১৯তম ওভার শুরু করেন। যা নো-বল হয়। ফ্রি-হিটে সিঙ্গল নেন ধোনি। সব মিলিয়ে ওভারে ১৯ রান আসে। শেষ ওভারে সিএসকের টার্গেট দাঁড়ায় ১৭ রান। যশ দয়ালের হাই ফুলটসে ছয় মারেন মাহি। ৫ বলে ১১ রান। আরসিবির জয় আর বিদায় যেন সময়ের অপেক্ষা। পরের বলেই মাহির উইকেট। ধোনি ১৩ বলে ২৫ রান করেন। ৪ বলে ১১ রান! প্লে-অফের দৌড়ে তখনও এগিয়ে চেন্নাই। স্ট্রাইকে শার্দূল ঠাকুর। প্রথমেই ডট বল। ৩ বলে ১১ রান দরকার সিএসকের। চতুর্থ বলে সিঙ্গল নেন শার্দূল। জাডেজা স্ট্রাইকে আসতেই ফের আশা সিএসকে শিবিরে। ২ বলে ১০ রান। গত বছর ফাইনালের পরিস্থিতি। সেই জাডেজাই স্ট্রাইকে। যশ ডট বল দেন। নো-বল না করলে সব আরসিবির পক্ষে। ডট বল দিয়ে ম্যাচ জেতালে যশ দয়ালই।